যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই পড়ুয়া অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিহালনি একটি ড্রোন তৈরি করেছেন। তৃতীয় বর্ষের এই দুই বন্ধু যে নতুন ধরণের ড্রোন তৈরি করলেন, সেই ড্রোন শব্দ চিনতে পারবে এবং তার উৎসও জানিয়ে দিতে পারবে। এই কাজের মাধ্যমে তারা আমেরিকার একটি সংস্থার তরফে বেছে নেওয়া প্রতিযোগীদের মধ্যে জায়গা করে নিতে পেরেছেন।
নাইরোবিতে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চলেছেন ওই দুই ছাত্রী। গোটা বিশ্ব থেকে মোট ৯ জনকে এই ড্রোন তৈরির প্রতিযোগিতায় বেছে নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যেই জায়গা করে নিয়েছেন এই দুই পড়ুয়া। নিজেদের তৈরি করা ড্রোন সম্পর্কে জানাতে গিয়ে তাঁরা বললেন, তাঁদের তৈরি করা ড্রোন শব্দ রেকর্ড করতে পারবে। ফলে সেই শব্দ অনুসরণ করে কিছু বার করা সহজ হবে। অচলের মতে কুয়াশায়, ধোঁয়ায়, গভীর জঙ্গলে, খুব কম আলোতেও এই ড্রোন কাজ করবে। আবার অন্বেষার কথায় যাঁরা কিছু খুঁজছেন, অর্থাৎ কোনও শব্দের ইঙ্গিত পেলে কিছু খুঁজে পাওয়া সহজ হবে, সেক্ষেত্রেও এই ড্রোন কোথা থেকে শব্দ আসছে, তা জানিয়ে দেবে। জানা যাবে অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ সহ গোটা ব্যাপার। এছাড়াও এই ড্রোনে সাধারণ মানুষের শব্দ রেকর্ড করার ক্ষমতা রয়েছে।
যাদবপুরের ইতিহাসে এই প্রথম তৃতীয় বর্ষের কোনও পড়ুয়া প্রজেক্টের জন্য অনুমোদন পেলেন। ড্রোনটি তৈরি করতে দুই পড়ুয়াকে পরামর্শ দিয়েছেন বিভাগীয় শিক্ষক পি ভেঙ্কটেশ্বরন। নাইরোবিতে যে প্রতিযোগিতায় তাঁরা যাচ্ছেন তার পোশাকি নাম হল 'আনইউজুয়াল সলিউশনস কম্পিটিশন'। অন্বেষা ইতিমধ্যেই এই ড্রোন তৈরি এবং গবেষণার জন্য মার্কিন ওই সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। প্রতিযোগিতায় বিচারকদের আসনে থাকছেন হার্ভার্ড সহ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭২ লক্ষ টাকা। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি গোটা বিশ্ব থেকে বাছাই করা ন'জনের তৈরি যন্ত্র উপস্থাপন করতে হবে। সেখানে যোগ দিতে ২৩ তারিখ নাইরোবি যাচ্ছেন অন্বেষা এবং অচল।
অন্বেষা এবং অচল তাঁদের তৈরি ড্রোনকে আরও অ্যাকটিভ করতে চান। যাতে বন্যা, বজ্রপাতের সময়েও সেই যন্ত্র সমানভাবে কাজ করে, তা নিয়েই তাঁরা গবেষণা চালাচ্ছেন। ড্রোনটি তৈরি করার পর ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দির্ষ্ট পোর্টালে তা নথিভুক্ত করেছেন। সেই মতো তিনি ড্রোন অ্যাকনলেজমেন্ট নম্বরও পেয়েছেন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এই নথিভুক্তিকরন বাধ্যতামূলক। অন্বেষা এবং তাঁর বন্ধুকে প্রতিযোগিতার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপাচার্য এবং অধ্যাপকেরা।