‘বাংলার কাশী’তে আছেন পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় শিবলিঙ্গ রাজরাজেশ্বর

নদীয়া জেলার শিবনিবাসকে বাংলার কাশী বলা হয়। জনশ্রুতি রয়েছে যে, শিব মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেছিলেন যে, তিনি কাশী থেকে তাঁর রাজধানী স্থানান্তরিত করছেন। তাই মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র শিবনিবাসে শিবের নতুন রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। ১০৮ টি শিব মন্দির নির্মাণ করেছিলেন।

তবে ইতিহাসবিদেরা বলেন, আঠারো শতকের মাঝামাঝি মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র বর্গি আক্রমণের হাত থেকে কৃষ্ণনগরকে রক্ষা করার জন্য এটিকে শিবনিবাসে স্থানান্তরিত করেন। মহারাজাই সম্ভবত শিবনিবাস নামকরণ করেন। কৃষ্ণনগর সদর মহাকুমার অন্তর্গত কৃষ্ণগঞ্জ থানার অধীনে সীমান্তবর্তী গ্রাম শিবনিবাস। গ্রামের নামেই মন্দিরের নামকরণ।

Shivniwas-1

লোক বিশ্বাস, এটি মহাদেব স্বয়ং প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আবার অনেকে বলেন, এই নামটি কৃষ্ণচন্দ্রের পুত্র শিবচন্দ্রের নামে রাখা হয়েছিল। এখানের সবচেয়ে বড় শিব মন্দিরটি বুড়ো শিব নামে পরিচিত। চূড়াসহ মন্দিরের উচ্চতা ১২০ ফুট। তিন দিক চূর্ণী নদীর  ধারে এই স্থানে প্রথম শিব মন্দিরটি তৈরি হয় ১৭৫৪ খ্রিষ্টাব্দে। এটিই মূল শিব মন্দির যার নাম রাজরাজেশ্বর।বর্তমানে এখানে ১০৮টির মধ্যে মাত্র তিনটি মন্দির অবশিষ্ট রয়েছে। শিবনিবাস প্রতিষ্ঠার পর কাশী ও কাঞ্চী থেকে আগত ব্রাক্ষ্মণগণের উপস্থিতিতে মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র অগ্নিহোত্র বাজপেয় যজ্ঞ সম্পন্ন করেন এবং ব্রাক্ষ্মণ কর্তৃক মহারাজ "অগ্নিহোত্রী বাজপেয়ী" উপাধি পান। হয়ত একারণেও শিবনিবাস কাশীর সমতুল্য প্রসিদ্ধি লাভ করে।

Shivniwas-2

রাজরাজেশ্বরের কষ্টিপাথরের শিবলিঙ্গের উচ্চতা প্রায় ৯ ফুট, প্রস্থে ২১ ফুটের কাছাকাছি। এই মন্দিরের পাশেই রাজ্ঞীশ্বর মন্দির, মন্দিরাভ্যন্তরের শিবলিঙ্গটি তুলনায় ছোটো, সাত ফুট। জানা যায়, রাজ্ঞীশ্বর মন্দিরটি রাজরাজেশ্বরের কিছু পরে ১৭৬২ খ্রীষ্টাব্দে নির্মাণ করা হয়েছে। রাজ্ঞীশ্বর শিবমন্দিরের প্রতিষ্ঠাফলক অনুযায়ী মহারাজ এই মন্দিরটি দ্বিতীয়া মহিষীকে উৎসর্গ করেন। বলা হয়, পূর্ব ভারতের সবচেয়ে বড় শিবলিঙ্গ এই রাজরাজেশ্বর।

 ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস হল শিবনিবাসে আসার সবচেয়ে ভালো সময়।  ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে শিবনিবাসে ভক্ত সমাগম দেখার মতো।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...