আর্থিকভাবে স্বচ্ছল পরিবার। বাবা-পিতামহ ধনে মানে উজ্জ্বল। কিন্তু সেই উজ্জ্বলতা অনেকটাই ফিকে হয়ে গিয়েছিল ডি.কে শরফের জীবনে। ছোটবেলায় দারিদ্র্যকে প্রতিদিন দেখতে হত খুব সামনে থেকে। তার মধ্যেই ঘটে গেল এক ঘটনা। ঘটনা না বলে তাকে দুর্ঘটনা বলাই ভাল।
তাঁর ছোটভাই তখন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের আইএ’র ছাত্র। তরতাজা যুবক। একদিন খেলার মাঠ থেকে ফিরে এসেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়ল। রোগ আমাশয়। আজকের ভাষায় হয়ত সাধারণ এক অসুখ। কিন্তু তাঁর ভাইয়ের ক্ষেত্রে সেদিন সেই আমাশয়ই হয়ে উঠেছিল প্রাণঘাতী। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে হারাতে হয় তাকে।
চিকিৎসক বলেছিলেন দু’ বোতল রক্ত লাগবে। রক্ত জোগাড়ে বড় অন্তরায় অর্থ। তাঁর ভাষায়, ‘দু’ বোতল রক্ত যদি থাকত তাহলে হয়ত ভাইকে হারাতে হত না এভাবে…’
ভাইয়ের অন্তিমক্রিয়ার সময় শ্মশানের মাটিতে দাঁড়িয়ে ষোল ছোঁয়া কিশোর ডি.কে শরফের মনে হয়েছিল অর্থের অভাবে ভাইকে হারানোর যে ঘটনা তাঁর সঙ্গে ঘটল এমনটা যেন আর কারুর জীবনে না ঘটে। অর্থ যেন চিকিৎসার অন্তরায় না হয় কারুর।
স্বপ্ন দেখা সহজ , কিন্তু সেই স্বপ্নকে রক্তে মাংসের করে তোলা ততটাই কঠিন। হাল ছাড়াননি তিনি। সেদিনের সেই কিশোরের স্বপ্নের ফসল আজকের আনন্দলোক মাল্টি স্পেশ্যালিটি হসপিটাল। ডি.কে শরফ আনন্দলোক হসপিটালের ফাউন্ডার ডিরেক্টর।
মুখ্য সচিব বি আর গুপ্তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন একদিন। নিজের ভাবনা বলেন। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু লেকটাউনে আউটডোর শুরুর অনুমতি দেন। সেভাবেই শুরু হয়েছিল আনন্দলোকের যাত্রা। সেদিনের স্বপ্নের অঙ্কুর আজ শাখাপ্রশাখায় মহীরুহ।