রাতারাতি হিরো বাঙালি কন্যা

কলকাতার বুকে তখন নেমে এসেছে রাত। সময়- রাত ১০:৪৫। না, রাত কিন্তু ততটা বেশিও হয়নি। সন্তোষপুরের কাছে একটি রাস্তা দিয়ে একাই বাড়ি ফিরছিলেন এক তরুণী। কলকাতার সন্তোষপুরের কাছে কোচিং ক্লাস থেকে সেই রাতে একাই ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়েই একটি ছেলে বাইকে চেপে তার দিকে আসে। প্রথমেই সে তরুণীকে অত্যন্ত কু-ইঙ্গিত করে তারপরেই সে তরুণীকে 'এই মেয়ে' বলে সম্বোধনও করে। তাতেও সাড়া না পেয়ে তারপর সেই তরুণীর গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টাও করে সেই বাইক আরোহী।

শহর, শহরতলি বা মফঃস্বল এরকম ঘটনা প্রায় রোজই দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই এরকম সময়ে দাঁড়িয়ে হিতাহিত জ্ঞানশুন্য হয়ে পড়েন বেশিরভাগ মহিলাই। কিন্তু চিরাচরিত ভয় পাওয়ার দিককে পিছনে ফেলে অত্যন্ত সাহসের সাথে রুখে দাঁড়িয়ে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে এই তরুণী। দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজের স্নাতকের তৃতীয় বর্ষে পাঠরতা এই তরুণী কিন্তু ভয় পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যাননি বরং যথেষ্ট সাহসের সাথে লাফ দিয়ে চড়ে বসে সেই ব্যক্তির বাইকে। বাইকে উঠেই চোখ চেপে ধরে তার এবং সাহায্যের জন্য প্রানপন চিৎকার শুরু করে সেই তরুণী। তরুণীর চিৎকারে যতক্ষণে আশপাশ থেকে লোকজন জড়ো হয় ততক্ষনে সেই তরুণীর হাতে রীতিমতো জোরে একটি কামড় বসিয়েছে সেই ব্যক্তি। হঠাৎ করে বাইকে চেপে বসে বেশ চমকে গেছিলেন সেই ব্যক্তি। কিন্তু সেই তরুণী সাহসিকতার সাথে সেই মলেস্টারের ডান হাত চেপে ধরেন। তখনই বাইকের ব্রেক কষতে বাধ্য হন তিনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, সেই ব্যক্তির কামড় খাওয়ার পরেও বিন্দুমাত্র ভয় পাননি সেই তরুণী| চিৎকার করে লোকজন জড়ো করা হলে আশেপাশের লোকজন প্রথমে গণধোলাই দিয়ে তারপর সেই অভিযুক্তকে তুলে দেয় পুলিশের হাতে। পুলিশ জানায়, ধরা পড়ার পরে অবশ্য সেই মেয়েটিকে 'বোন' সম্বোধন করে সেই অভিযুক্ত।

শহর হোক বা গ্রাম, বড় রাস্তা হোক বা গলি মেয়েদের ইভটিজিংয়ের শিকার হতেই হয়। ছেলেদেরও কিছু ক্ষেত্রে মলেস্টেশনের শিকার হতে হয় কিন্তু তার সংখ্যা মেয়েদের তুলনায় অনেকটাই কম। তাই মেয়েদের এবার উঠে দাঁড়ানোর সময় এসে গেছে|  নিজেদের রক্ষা করতে এবার এরকমই সব পথ বেছে নিতে হবে মেয়েদের| তবে এরকম একটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েও যে ওই তরুণী যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তার জন্য তিনি যথেষ্ট প্রশংসার দাবি রাখেন।       

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...