বিআইটিএম-এ কবিগুরুর গান রেকর্ডারের প্রদর্শনী চলছে

 

বাংলা ভাষার আজ যে বিশ্ব স্বীকৃতি, তা শুরু হয়েছিল বেশ কিছুকাল আগে থেকেই তা বলাই বাহুল্য। ঔপনিবেশিক ইংরেজরা যখন বাংলায় নিজেদের রাজধানী স্থাপন করল, তখন তাদের ভাষাকে প্রাধান্য দেবার সমস্ত রকম উপাদানই তৈরী করে ফেলেছিল। পিছিয়ে পড়েছিল এখানকার মূল ভাষা। যদিও আঞ্চলিক ভাষাগুলির অস্তিত্ব বহাল ছিল, কিন্তু শহরে তা ছিল নিতান্তই অবজ্ঞার একটি ভাষা। সেই সময়ে যে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আমাদের নিজস্ব ভাষাকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপিত করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সময় তাঁর 'গীতাঞ্জলী'র মাধ্যমে বিশ্বজয় বাংলা ভাষার জয়গান গেয়েছিল বিশ্বের আঙিনায়।

                কবিগুরু মানেই বাঙালির আবেগ, বাঙালির নস্টালজিয়া। কবিগুরুর কবিতার পাশাপাশি তাঁর সৃষ্ট সঙ্গীত যেন বাঙালিকে নিজেকে চিনতে সাহায্য করে এখনও। বাঙালি মাত্রেই অবগত, তিনি শুধুমাত্র লেখক ছিলেন না। ছিলেন পারফর্মারও। অর্থাৎ তিনি তাঁর সমসাময়িক সময়ে কবিতা পাঠ করেছেন, গান গেয়েছেন, নাটকে অভিনয় করেছেন এমনকি নৃত্যনাট্যেও অভিনয় করেছেন। স্টেজ পরিবেশনার পাশাপাশি যখন ভারতে প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ড এল, তখন তিনি সেখানেও গেয়েছিলেন। তাঁর গাওয়া গান আমরা এখনও শুনতে পাই।

                কিন্তু সেই সময়ের যন্ত্রের রকম সকম কেমন ছিল? কীভাবে তিনি তাঁর গান রেকর্ড করেছিলেন? আমরা তা জানিনা। সেই যন্ত্র চাক্ষুস করা যাবে এবারে বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামের সৌজন্যে। বৃহস্পতিবার সেখানে একটি প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। জর্জ নিউম্যান জিএমবিএইচ ডিস্ক রেকর্ডিং মেশিন। এই যন্ত্রের সাহায্যেই কবিগুরু তাঁর কন্ঠে প্রথম গান 'তবু মনে রেখো'... রেকর্ড করেছিলেন। যন্ত্রটিতে কবিগুরুর গান চালিয়ে শোনানোর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। কবিগুরুর সেই যন্ত্র ছাড়াও ওই প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে টেলিফোনের আবিষ্কর্তা গ্রাহাম বেলের টেলিফোন, ১৬ এমএম মুভি প্রজেক্টর, মেকানিক্যাল ক্যালকুলেটর ইত্যাদি। এগুলি সমস্ত এতদিন আর্কাইভেই রাখা ছিল বলে জানিয়েছেন মিউজিয়ামের কর্তারা। সাধারণ মানুষ এগুলি কোনওদিন দেখেননি। সাধারণ মানুষের অবগতির জন্যই এই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা বলে জানান তিনি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের কিউরেটর জয়ন্ত সেনগুপ্ত। এই প্রদর্শনীটি চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এখানে মোট ১৫টি দুষ্প্রাপ্য যন্ত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে।                                 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...