“মোগ্যাম্বো খুশ হুয়া”… এই সংলাপ সিনেপ্রেমী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মজ্জায় মজ্জায় গেঁথে গিয়েছিল একটা সময়। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ‘ভিলেন’ অথবা ‘রাশভারী’ চরিত্রের কথা বললেই চোখ বন্ধ করে একটাই নাম মনে আসে। অমরেশ পুরী। মিস্টার ইন্ডিয়া, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে, করণ অর্জুন, নায়ক-সহ প্রায় ৪০০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। শুধু ভারত নয়, তাঁর অভিনয়ক্ষমে নজর কেড়েছেন পাশ্চাত্য চলচ্চিত্রের আঙিনাতেও। ২২ জুন, শনিবার অমরেশ পুরীর ৮৭তম জন্মদিনে তাঁকে অভিনবভাবে শ্রদ্ধা জানাল গুগল।
১৯৩২ সালে জন্ম পাঞ্জাবের নওয়ান শহরে। দুই দাদার পায়ে পা মিলিয়ে পাড়ি দেন মুম্বই শহরে। দুই দাদা মদন পুরী এহং চমন পুরী দু’জনেই তখনকার বোম্বে ইন্ডাস্ট্রির অতি পরিচিত ‘খলনায়ক’। প্রতিষ্ঠিত অভিনেতাও বটে। প্রথম স্ক্রিন টেস্টে না উতরে সরকারী চাকরির পথ বেছে নেন। দিন যায়, তবে অভিনয়ের ‘ভূত’ ঘাড় থেকে নামেনি তাঁর। অতঃপর সত্যদেব দুবের লেখা চিত্রনাট্যে পৃথিবী থিয়েটারে অভিনয় করা শুরু করেন। সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে পুরস্কৃত হওয়ায় পর টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনে মুখ দেখান। এরপরই নজরে পড়েন পরিচালক-প্রযোজকদের। শুরু হয় পুরোদস্তুর অভিনয়জীবন। তবে প্রথমটায় সাপোর্টিং চরিত্রগুলোতেই দেখা যেত তাঁর মুখ। তবে বড়সড় ব্রেক পান সুভাষ ঘাইয়ের সুপারহিট ছবি ‘বিধাতা’-র হাত ধরে। এরপর আর ফিরে তাকেতে হয়নি তাঁকে।
পশ্চিমী সিনেপ্রেমীদের কাছে তিনি ‘মোলা রাম’ নামে পরিচিত। এই নামকরণের নেপথ্যে প্রখ্যাত হলিউড পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ। স্পিলবার্গের হাত ধরে ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’ এবং ‘দ্য টেম্পল অফ ডুম’ ছবিতে অভিনয় করেন। মোলা রামের চরিত্রে রীতিমতো পশ্চিমী দর্শককে মাতিয়ে তোলেন। তাঁর ঝুলিতে পুরস্কারের সংখ্যাও অগণিত। সেই জনপ্রিয় ভারতীয় অভিনেতার বেশ কিছু রঙিন ছবিই শনিবার গুগল ডুডলে ভেসে উঠেছে গুগলের শ্রদ্ধার্ঘ্যে।
অমরেশ পুরী নিঃসন্দেহে ভারতীয় সিনেমা জগতের এক অন্যতম নক্ষত্র। ২০০৫ সালের ১২ জানুয়ারি ৭২ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় মু্ম্বই ইন্ডাস্ট্রিতে ঘটে নক্ষত্রপতন। তাঁর প্রয়ানের পর কেটে গিয়েছে ১৪টি বছর। আজও সেই অভাব অপূরণীয়।