‘ফিল্ড অফ লাইট’

পাহাড়ের গায়ে খোলা উপত্যকা। সূর্যটা আসতে আসতে ডুবতে শুরু করেছে। সোনালী গোলক একটু একটু করে গলতে গলতে ছড়িয়ে পড়ছে গোটা উপত্যকায়। তারপরই আধ অন্ধকার। সূর্য ডোবার পালা শেষ করে চোখ তখন আঁধারে ধাতস্থ হতে চাইছে।
ঠিক তখন ঘটে আর এক আশ্চর্য কান্ড!

চোখের সামনে যেন ঘুম থেকে জেগে ওঠে অন্য এক জগৎ। একটু আগে যে কালো চাদরটা আস্তে আস্তে বিছিয়ে যাচ্ছিল গোটা উপত্যকায় এখন তার মধ্যেই ফুল ফুটে উঠেছে একটা একটা করে।

FieldofLight1

কোথাও নীল, কোথাও সাদা, কোথাও নিয়ন হলুদ- অন্ধকারের গায়ে আলোর মোতি। অপূর্ব সেই দৃশ্য। প্রথমে বিশ্বাস হতে চায় না চোখ। মনে হয় স্বপ্ন! তারপরই ভুল ভেঙে যায়।

গোটা উপত্যকা জুড়ে ৫৮ হাজার আলোর ফুল। সবটাই তৈরি করা। ‘লাইট ইন্সটলেশন’। প্রকৃতির অপার্থিব সৌন্দর্যকে টেকনলজিতে মিশিয়েছেন আমেরিকার শিল্পী ব্রুস মুনরো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো এবং লসএঞ্জেলসের মাঝামাঝি অঞ্চলে ১৫ একর জায়গা জুড়ে তৈরি করা হয়েছে ‘ফিল্ড অফ লাইট’। পুরোটাই সৌর বিদ্যুতের সাহাজ্যে।

২০১৯ সালের মে মাসে দর্শকদের জন্য খুলে যায় এই বিস্ময় উপত্যকা। তারপর থেকে পৃথিবীর সব পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ২০২০ মে পর্যন্ত প্রায় ৪১ টি দেশ থেকে নিয়মিত পর্যটক এসেছে এখানে। তারপরই অতিমারীর জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
সম্প্রতি আবার পর্যটকদের জন্য খুলে গিয়েছে ‘ফিল্ড অফ লাইট’।

FieldofLight2

এই অসাধারণ কাজের জন্য সারা পৃথিবীতে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন ব্রুস মুনরো। অস্ট্রেলিয়া, লন্ডন, দক্ষিণ কোরিয়াতেও একই ধরনের প্রোজেক্টের কাজ শুরু করেছেন।

বৃহস্পতি থেকে রবিবার সূর্যাস্তের পর শুরু হয়ে যায় আলোর খেলা। এক ঘন্টা পর্যন্ত দর্শকরা ‘ফিল্ড অফ লাইটে’র আনন্দ নিতে পারবেন। আগাম টিকিট বুক করতে হয় অনলাইনে।

করোনার প্রকোপের পর একাধিক করোনা বিধি মেনে চলতে হয় দর্শকদের। ৬ ফুট সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক, শরীর ঢাকা পোশাক- এই সব বিধি মানা হচ্ছে কিনা সেদিকে কড়া নজর আছে নিরাপত্তারক্ষীদের।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...