সামনের দিন ভারতের। ভারতে এসে এমনটাই বললেন অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। সম্প্রতি নতুন দিল্লিতে শুরু হওয়া অ্যামাজনের বাণিজ্যিক সম্মেলন 'সম্ভব'-এ যদিও সরকারিভাবে বেজোসের আসার কোনও রকম আগাম সূচি ছিলনা, শেষ মুহূর্তে অ্যামাজন ইন্ডিয়ার কান্ট্রি হেড অমিত আগরওয়াল ট্যুইট করে জানান, বেজোস সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন। তিনি দিল্লি পৌঁছে রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীকে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন।
ভারতে এসে তিনি জানান, ১৯৯৩ সালে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠার সময়েই তিনি জানতেন, আগামী দিনে তাঁর উদ্যোগ সফল হবে। তবে ২৫ বছরে তাঁর কল্পনাকেও ছাপিয়ে গিয়ে অ্যামাজন দুরন্ত ব্যবসা করেছে। তিনি তাই আশাবাদী, চলতি শতকে ভারত-মার্কিন জোট বিশ্ব -বাণিজ্য শাসন করবে। ভারতের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি সংস্থাগুলিতে ১ বিলিয়ন ডলার লগ্নি করবে অ্যামাজন। এর পাশাপাশি অ্যামাজন ইন্ডিয়ার ব্যবসার পরিধি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পে সাড়া দিয়ে ২০১৫ সালের মধ্যে ভারতের তৈরি ৭০,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে। ভারতে দু'দিনব্যাপী বাণিজ্য সম্মেলন-এ দিল্লির জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই সম্মেলনে বেজোসের সঙ্গে ইনফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তি, বাটা ইন্ডিয়ার সিইও সন্দীপ কাটারিয়া, ফিউচার গোষ্ঠীর কিশোর বিয়ানী সহ বহু বিশিষ্ট শিল্পপতি উপস্থিত ছিলেন।
ইন্ডিয়ান ব্র্যান্ড ইক্যুইটি ফাউন্ডেশনের সাম্প্ৰতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশের ৫০ লক্ষ কোটি টাকার খুচরো বাজারের শতকরা ৯০ শতাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রের দখলে রয়েছে যার প্রায় পুরোটাই পাড়ার দোকান নির্ভর ব্যবসার ওপর দাঁড়িয়ে। সেটিকে সামনে রেখে সম্প্রতি বাজারে এসেছে রিলায়েন্সের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম 'জিওমার্ট'। মুকেশ অম্বানির কথায় আগামী দিনে জিওমার্ট ৭০,০০০ কোটি মার্কিন ডলারের ব্যবসার সম্ভাবনা তৈরী করবে। সেই জায়গাও যে অ্যামাজন খুব সহজে ছাড়বেনা, তা বেজোসের ঘোষণার মধ্যে দিয়েই বোঝা গেল। তিনি এদিন জানিয়েছেন, দেশের ১০০টি শহর, গ্রাম এবং পাড়ায় তাদের তরফে 'ডিজিটাল হাট' খোলা হবে। সেগুলি নেটের মাধ্যমে যুক্ত রেখে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করবে অ্যামাজন। এই ব্যবস্থায় সাধারনের জন্য ই-কমার্স পরিষেবা যেমন পাওয়া যাবে, তেমনি অ্যামাজনে পণ্য বিক্রি করতে আগ্রহী বিক্রেতারা ইমেজিং-ক্যাটালগিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সহ অনেক সুবিধা পেতে পারবেন। তিনি আরও জানান, অ্যামাজনে নথিবদ্ধ না হয়েও দেশের যে কোনও ক্ষুদ্র এবং মাঝারি সংস্থা ডিজিটাল হাটে'র সুযোগ নিতে পারবে। পাড়ার দোকানের ব্যবসা সম্প্রসারণে অ্যামাজন 'ইজি প্রকল্প' এবং 'আই হ্যাভ স্পেস' প্রকল্পকেও আরও পরিবর্ধিত হারে ভারতে চালু করার কথা জানালেন বেজোস।
আশা করা হচ্ছে, এইভাবে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটানো যায়, এবং ই-লেনদেনের দিকে মানুষের আগ্রহ বাড়ানো যায়, তাহলে কিছুটা হলেও আর্থিক উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।