ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমে এক ছোট্ট গ্রাম ডক্স। আর পাঁচটা ইউরোপীয় গ্রামের থেকে খুব বেশি তফাৎ চোখে পড়ে না। গ্রামের মধ্যে দোকান-বাজার, সেলুন, সবই আছে। আছে মন ভালো করার জন্য গান শোনার ব্যবস্থাও।
তবু এই গ্রাম একেবারে আলাদা। এই গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে সীমাহীন যত্ন আর ভীষণ সহানুভূতিশীল এক মন নিয়ে।
গ্রামের বাসিন্দা ১০৫ জন। তাঁরা সকলেই ‘বিশেষ নাগরিক’। প্রতিদিন লড়াই চালিয়ে যান। জীবনের মূল স্রোতে ফেরার। তাঁরা সকলেই অ্যালঝাইমার্স রোগের শিকার।
এই তাঁর তাঁদের আপনভূমি। প্রকৃতির সান্নিধ্যে তাঁদের চিকিৎসা চলে। ভুলে যাওয়া অতীতকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা। খুব ধৈর্য আর যত্নে।
রোগীদের অনেকেই বিস্মৃতির কবলে। তাঁরা ধাম ভুলেছেন। কেউ কেউ নামও। বর্তমান আঁকড়ে বেঁচে থাকা। তাও যেন সরু রেখায় ঝুলছে। চেষ্টা চলে তাঁদের ভালো রাখার।
ম্যাডিলাইন এলিসাদেলা। বয়স ৮২। এই গ্রামের প্রথম বাসিন্দা। নেদারল্যান্ডের একটি গ্রামের অনুকরণে গড়ে তোলা হয় এই গ্রাম। তাঁর কথায়, মনে হয় না যে এই গ্রামের চিকিৎসার জন্য আছি, এটাই যেন নিজের বাড়ি’!
চিকিৎসকরা যখন জানালেন ম্যাডিলাইনের অ্যালঝাইমার্স হয়েছে তারপর থেকে মেয়ের কাছে থাকতেন। কিন্তু মেয়েও অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি চলে আসেন এই গ্রামে।
আসলে চিকিৎসাকেন্দ্র হলেও বেশিরভাগ বাসিন্দাই এখানে স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করেন। যদিও চিকিৎসকের নজর থাকে সর্বক্ষণ। থাকেন মেডিকেল কর্মীরাও।
ফ্রান্সের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চ কেন্দ্রের গবেষকদল এই কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
বাসিন্দাদের মন ভালো রাখতে নানা রকম কাজ শেখানো হয় তাঁদের। যেমন সপ্তাহে একদিন করে বেকিং- এর ক্লাস হয়। আছে ক্যাফেটেরিয়া। সেখানে হয় গান শোনার আসর।
গ্রামে দোকান বাজারের ব্যবসায়ীরাও সচেতন বাসিন্দাদের সম্বন্ধে। তাঁরা বলেন আমদের রসদ মানবতা!