হিন্দুদের 'চারধাম'-এর পবিত্র চার মন্দিরের মধ্যে অন্যতম দ্বারকাধীশমন্দির। বিষ্ণুর অষ্টম অবতার শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয় এই মন্দিরে। ঐতিহাসিকদের বিশ্বাস এই প্রাচীন মন্দিরটি প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল। যদিও বহিঃশত্রুর আক্রমণে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় এই মন্দিরটি। প্রতিবারই হয় নব নির্মিত রূপ পায় মন্দির। হিন্দুদের বিশ্বাস, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাতি ভজরানাভা এই মন্দিরটি তৈরি করেছিলেন। যিশু খ্রিস্টের জন্মেরও ৫০০ বছর আগে আদি শঙ্করাচার্য এই মন্দির দর্শন করতে গিয়েছিলেন। এই মন্দির জগৎ মন্দির নামেও পরিচিত।
১৪৭২ সালে সুলতান মাহমুদ বেগাদার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর ১৫০০-১৬০০ খ্রীষ্টাব্দে মাঝামাঝি সময় রাজা জগৎ সিং রাঠোর এই মন্দিরটি আবার তৈরি করেছিলেন। মহাভারতেও ‘রাজধানী দ্বারকা’ নামে উল্লেখ রয়েছে এই মন্দিরের। বর্তমানে মন্দিরের উচ্চতা ৫১ মিটার পর্যন্ত। সম্পূর্ণ বালি পাথর দিয়ে তৈরি এই মন্দিরে ৭২ টি গম্বুজ দেখতে পাওয়া যায়। মন্দিরের মাথায় একটি ত্রিকোণ পতাকায় আঁকা রয়েছে একটি চাঁদ ও সূর্যের চিহ্ন। দিনে চারবার পরিবর্তিত হয় পতাকা।
প্রত্যেক বছর জন্মাষ্ঠমীর সময় সেজে ওঠে দ্বারকাধীশমন্দির। প্রচুর ভক্ত ভিড় সমাগম হয়। গুজরাটের দ্বারকায় অবস্থিত এই মন্দির। এই মন্দির দর্শনের আদর্শ সময় আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি। এই সময় এখানে হিন্দোলা উৎসব পালন করা হয়। এই মন্দিরে পৌঁছনোর সেরা উপায় হল রেল পথ।
মাথুরা জনশন রেল স্টেশন থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব ৩.৫ কিলোমিটার। এই পথে অটোরিকশা ও সাইকেল রিকশা দুই পাওয়া যায়। প্রত্যেক বছর এই পথ ধরেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দর্শণের জন্য দ্বারকাধীশমন্দিরে উপস্থিত হন ভক্তরা।