কোনারকের মন্দিরে পূজিত হন সূর্য দেব

পুরী আর কোনারক যেন অবিচ্ছেদ্য। কোনারক পৃথিবীর বিস্ময়। সূর্যদেব আজও জাগ্রত কোনারকে। 'সূর্য দেব' অর্থাৎ সূর্যের দেবতা। সূর্যপুজোর ইতিহাস অতি প্রাচীন।

ওড়িশার এই প্রাচীন মন্দিরটিও 'কোনারকের সূর্য মন্দির' নামেই পরিচিত। ভারতের ওড়িশা রাজ্যে অবস্থিত এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল ১২৫০ খ্রিস্টাব্দে। মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন গঙ্গা রাজ বংশের রাজা প্রথম নরসিংহ দেব। যদিও কিছু হিন্দুদের বিশ্বাস, শ্রীকৃষ্ণের পুত্র শাম্ব অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তপস্যার দ্বারা সূর্য দেবকে খুশি করেছিলেন। তারপরেই তিনি সেই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। তিনিই সমুদ্রের তীরে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

 

Konark1

 

তবে মন্দিরে একসময় সূর্য দেবের বিশাল একটি বিগ্ৰহ ছিল যা আজ আর নেই। বহুবার ধ্বংস হতে হয়েছিল এই মন্দিরটিকে। ১৫০৬ সালে বাংলার শাসক সুলতান সুলায়মান খান করনানির সেনাপতি কালাপাহাড়ের আক্রমণে কোনারক মন্দিরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এরপর নরসিংহদেব আবার এই মন্দিরটিকে ধ্বংস করেছিলেন। তাই ১৬২৬ সালে খুরদার রাজা নরশিমাদেব সূর্য দেবের মূর্তিটি পুরীর জগন্নাথের মন্দিরে নিয়ে যান। তবে এরপরেও পর্তুগিজ জলদস্যুদরা কোনারকের মন্দিরের মাথায় থাকা শক্তিশালী চুম্বকটিকে নষ্ট করে দেন। এরপর থেকেই মন্দিরটি বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে অরণ্যে ছেয়ে যায় এই মন্দিরটি। এছাড়াও মন্দির অনেক অংশ এখন বালি চাপা পড়ে গেছে।

 

Konark2

 

তবে প্রায় ৩০০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার পর ১৯০৪ সালে ইংরেজ সরকার এটি আবার উদ্ধার করেন। যদিও আসল মন্দিরটি এখন আর নেই। এখন শুধু মাত্র নাট মন্দিরটি পড়ে রয়েছে। প্রাচীন দ্রাবিড় স্থাপত্য শৈলীর নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় এই মন্দিরটি দেখে। ১৯৮৪ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য রূপে স্বীকৃতি পায় এই মন্দিরটি

ওড়িশার পুরী থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। আর ভুবনেশ্বর থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ৬৫ কিলোমিটার। প্রত্যেক বছর এই মন্দির দর্শন করতে বহু পর্যটক আসেন।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...