‘যে এর মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, একমাত্র সে-ই বোঝে এ যে কী অসহ্য যন্ত্রণা।’ এক সাক্ষাৎকারে এ কথাই বলেছিলেন অ্যাসিড আক্রান্ত মনীষা পৈলান। শরীরে ও মনে দগদগে ক্ষত নিয়ে তিনি আজও বিশ্বাস করেন ‘চামড়া পুড়ে গেলেও জীবনের সুখ, চাওয়া-পাওয়া, প্রেম এগুলো পুড়ে যায় না। তোমার মুখ পুড়ে গেলেও তোমার মধ্যে কিছু না কিছু সত্তা রয়েছে, যা প্রকাশ করে তুমি বাঁচতে পারো। আমি যে একজন ভিক্টিম, সবসময় সেটা ভাবলে চলবে না। হার মেনে নিয়ে থেমে থাকলে চলবে না।’
না, তিনি থেমে থাকেন নি। নিজের মতো করে বেঁচে থাকার লড়াই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছেন তাঁর মতোদেরকেও। সম্প্রতি হাজার হাজার ক্যামেরার ফ্ল্যাশের সামনে র্যাম্পে হাঁটলেন আত্মবিশ্বাসী-সাহসিনী মনীষা। এই র্যাম্প শো এর থিম ছিল অ্যাসিড বিক্রি বন্ধ হোক। সেই থিমেই বন্ধু সুজয়ের বাড়ানো হাত ধরে র্যাম্পে হাঁটলেন তিনি। বারবার বিভিন্ন ইইন্টারভিউতে জানিয়েছেন, তাঁর ক্যামেরার সামনে আসার কারণ যাতে এই ঘটনা সামনে আসে, জনসাধারণের মধ্যে এই ঘটনা ছড়িয়ে দেওয়া। সাদা-পিচ রঙের ডিজাইনার সুতির শাড়ীতে তিনি ক্যাট ওয়াক করেন। এই ধরনের শো তিনি আবারও করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আয়োজক সুজয় দাশগুপ্তও চান, বিভিন্ন ভাবে আক্রান্ত মহিলাদের তাঁর এই শো এ নিয়ে আসতে।
অ্যাসিড আক্রান্তদের উপরে যে ধরণের সামাজিক এবং মানসিক চাপের বাতাবরণ তৈরি হয়, অনেক সময়েই আত্মহননের পথ বেছে নিতে বাধ্য হন তাঁরা। সৌন্দর্য-এর ‘মিথ’ আজও বয়ে বেড়ায় এ সমাজ, আর তা ভেঙে ফেলতেই এ ধরণের উদ্যোগে অংশগ্রহন করে ক্ষতকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এগিয়ে চলতে বদ্ধ পরিকর মনীষারা।