অনেকেই স্বপ্ন দেখে। অনেকেই স্বপ্নের জন্য লড়াই করে। কেউ রাতারাতি ছুয়ে ফেলে স্বপ্ন, আবার কেউ পারে না। পথ কঠিন, যে কোনও মুহুর্তে তলিয়ে যেতে পারে স্বপ্নটা- এই বাস্তব স্ত্যি জেনেও যারা লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে যায় না এবং শেষ পর্যন্ত যুদ্ধটা যেতে তাদের আলাদা করে কুর্নিশ জানায় বিশ্ব। তেমনই এক নাম আঁচল গঙ্গওয়াল।
মধ্যপ্রদেশের রাজধানী শহর ভোপাল থেকে ৪০০ কিমি দূরে নীমচ শহরের বছর চব্বিশের তরুণী। এখন গোটা দেশের মানুষের নজর তাঁর দিকেই। ফ্লাইং অফিসার হিসেবে সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দিয়েছেন আঁচল।
তীব্র দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে তাঁর এই জার্নি।
নীমচ শহরের বাসস্ট্যান্ডে বাবার চায়ের দোকান। মানুষের কাছে তাঁর পরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘চাওয়ালা’। চায়ের দোকানের স্বল্প আয়ে কোনও রকমে দিন গুজরান। অনেকসময় পড়াশোনার খরচ সামলাতে হাত পাততে হয়েছে আত্মীয়দের কাছে। পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখাটা অনেকের কাছেই তাই বাড়াবাড়ি লেগেছিল।
২০১৩ সালে উত্তরাখন্ডে ভয়াবহ কেদারনাথ বিপর্যয়ের পর ভারতীয় সেনা বাহিনীকে দেখে মেধাবী আঁচল ভেবেছিলেন অন্য কিছু না, তিনি সেনাবাহিনীতেই যোগ দেবেন।
ছোটবেলা থেকেই ভালো ছাত্রী। বাস্কেটবল খেলাতেও নজর কেড়েছিলেন। সেনাবাহিনীতে কিভাবে যোগ দিতে পারবেন সে বিষয়ে প্রথম খোঁজ শুরু করেছিলেন পাড়ার ম্যাগাজিন স্টল থেকে। শুরু করেন প্রস্তুতি নেওয়া। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হওয়ার পর সাব-ইন্সপেক্টর পদে মধ্যপ্রদেশ পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন আঁচল৷ লেবার ইন্সপেক্টর হওয়ার পর পুলিশের চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। সেনা বাহিনীতে যোগ দানের প্রস্তুতি শুরু করেন।
সাফল্য আসে ষষ্ঠ প্রচেষ্টায়। ব্যর্থতা তাঁকে কাবু করতে পারেন নি। অসাফল্য এসেছে। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়েছেন কঠিন থেকে কঠিনতর পরিশ্রমে। শেষপর্যন্ত সফল হন। ভারতীয় বায়ুসেনার ফাইটার পাইলট হওয়ার পরীক্ষায় প্রতি ধাপে উত্তীর্ণ হন আঁচল। তারপর প্রশিক্ষণ পর্ব। সেই পর্বেও সস্মমানে নির্বাচিত হন ভোপালের এই মেয়ে।ডুন্ডিগলে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমিতে শীর্ষস্থান অধিকার করেছেন তিনি।