এ যেন এক রূপকথার গল্প। রেলওয়ে স্টেশনে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা এক ছোট্ট বাচ্চা এবার পাড়ি দিচ্ছে স্পেনের উদ্দেশ্য।
এই অবিশ্বাস্য গল্পই সত্যি হয়েছে ৬ বছরের ছোট্ট সোমের জীবনে। হারিয়ে যাওয়ার এই অনাথ শিশুকে দত্তক নিয়েছেন স্পেনের বার্সেলোনার এক মহিলা।
Highlights:
১। ৬ বছরের শিশুর কী পরিণতি হয়েছিল?
২। কোথায় পাওয়া গিয়েছিল শিশুকে?
৩। কত জন বিদেশি পরিবার দত্তক নিয়েছে?
২০২৩ সালে খড়গপুর রেলওয়ে স্টেশনে অনাথ অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল ৬ বছরের এই খুঁদেকে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, ইচ্ছাকৃতভাবেই তাকে ফেলে রেখে গিয়েছিল তার মা-বাবা। দীর্ঘদিন চাইল্ড লাইনের তরফ থেকে তার বাবা-মায়ের খোঁজ করলেও কোন সন্ধান মেলেনি।
এরপর রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর সরকারি বিদ্যাসাগর বালিকা ভবনে রাখে। অবশেষে ১ বছর পরে বাচ্চাটিকে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তার দত্তকের জন্য অ্যাপ্লিকেশনও ইন্টারনেটে পোস্ট করা হয়। আর সেই উদ্যোগের কারণেই আজ নতুন পরিবার খুঁজে পাচ্ছে ছোট্ট বাচ্চাটি। নতুন মায়ের কাছে যাচ্ছে সে।
জানা গেছে, বার্সেলোনার ওই মহিলার নাম চেরি। তিনি একজন সিঙ্গেল মাদার ও স্পেনের বার্সেলোনার এক কোম্পানির ডিরেক্টর। অবিবাহিত এই মহিলা পরিবারে একটি সন্তান চেয়েছিলেন এবং তাই তিনি অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেন। এরপরে সেই অবেদান অনুযায়ী আন্তর্জাতিক সংস্থা 'আফা' এই বিষয়ে উদ্যোগ নেয়। বিগত কিছু মাস ধরে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে এই দত্তকের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এবার সন্তানকে নিজের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য মেদিনীপুর এসেছিল চেরি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা শাসকের ভবনে এই দত্তক প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। জেলাশাসক খোরশেদ আলী কাদরী দায়িত্ব সহকারে চেরির হাতে তুলে দেয় ছোট্ট প্রাণকে। যাত্রার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ভিসাও মহিলারা হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উল্লেখ্য, মেদিনীপুর বিদ্যাসাগর বালিকা ভবন থেকে এখনো অবধি ৬২ জন শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে এবং তার মধ্যে ৪১ জন শিশুকে দত্তক নিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কিছু পরিবার। তার মধ্যেও ৬ টি শিশুকে দত্তক নিয়েছে নানান বিদেশী পরিবার। এখনও এই সরকারি হোমে ছয়টি শিশু রয়েছে। তাদের দত্তক প্রক্রিয়াঅ যাতে তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ হয়, তার জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।