সামনেই ভোট। আগেই আলোচনা করেছি, আগামী লোকসভা নির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোট সম্পন্ন করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যেই একটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল বন দফতরের পক্ষ থেকে বুথের নিরাপত্তার জন্য দফতরের বিশেষ দল থাকবে। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারের রিটার্নিং অফিসারের পক্ষ থেকে জেলায় ভোটের দিন বন্যপ্রানীদের উপদ্রব হতে পারে, এমন এলাকার বুথের নিরাপত্তার জন্য সাহায্য চাওয়া হয়। বন দফতরের তরফে তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিশেষ দল উপস্থিত থাকবে ভোট বুথে। যদিও শুধু আলিপুরদুয়ারের ভোটকেন্দ্রগুলির জন্যই এই নিরাপত্তা চাওয়া হয়, তবুও পরবর্তীতে দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়িতে স্পর্শকাতর এলাকাগুলির জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে বন দফতর থেকে।
দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে উত্তরবঙ্গের তিনটি জেলাতেই ভোটের দিন বিশেষ দল মোতায়েন থাকবে। সেই দলে থাকবে এমন প্রশিক্ষিত ব্যক্তি, যাঁরা বন্য প্রাণীকে ঘুম পাড়ানি গুলি দিয়ে বশ করতে পারবেন। সেই সঙ্গে ছোট বন্য প্রাণী ধরার জন্য বিভিন্ন ধরণের জাল, রাতের বেলায় নজরদারি চালানোর জন্য উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন টর্চও থাকবে ওই দলের সঙ্গে। জানানো হয়েছে সাত-আটজনকে নিয়ে ওই বিশেষ দলটি তৈরী করা হবে। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা জানিয়েছেন, আলিপুরদুয়ারের পর দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার জন্যেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন। পাশাপাশি তিনি জানান, দক্ষিণবঙ্গ-এর জঙ্গল এলাকা বন্যপ্রাণ শাখার অন্তর্গত নয়। এই জেলাগুলি ডিভিশনের অন্তর্গত। তাই এই জেলাগুলির নিরাপত্তার বিষয়টি ডিভিশনই দেখভাল করবে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গের এক ডিভিশনের মুখ্য বনপাল জানান, বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশন আগেই তাঁদের সংগে বৈঠক করেছে। উক্ত বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি ডিভিশন, রেঞ্জ এবং বিটকে যথেষ্ট সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও বিশেষ দলের সাহায্য চাওয়া হয়নি। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন দফতরই দক্ষিণবঙ্গের সব কটি কেন্দ্র্রের ভোটে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বন দফতরের উত্তরবঙ্গের এক কর্তা জানান, নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী তাদের বাহিনী বা গাড়ি কোনো ভোটের কাজে কোনোদিনই ব্যবহার করা যায়না। কিন্তু যেহেতু বন্যা প্রাণীরা কোনও বুথ এলাকায় ঢুকে পড়লে ভোটদান প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে, তাই এই ধরণের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যে কেন্দ্রে যে দিন ভোট, তার দুদিন আগে থেকেই সেই কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট বুথ এলাকায় এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা মোতায়েন করা হবে। ভোটের পরদিন পর্যন্তও তা মোতায়েন থাকবে। প্রত্যেকটি ডিভিশনের রেঞ্জ এলাকার বনকর্মীদের নিয়ে আলাদা দোল করে বন্যপ্রাণীদের উপর নজর রাখা হবে। যাতে বুথের কাছাকাছি আসার আগেই তাদের আটকে দেওয়া যায়। উত্তরবঙ্গ ছাড়াও দক্ষিণবঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও পশ্চিম বর্ধমানের একাংশের জন্যও এরকম বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখার কথা তাঁরা ভাবছেন।