কলকাতার রাস্তায় যানজট এড়াতে মেট্রোর উপরেই ভরসা রাখতে দেখা যায় অফিসযাত্রীদের। কিন্তু মেট্রোতে উঠলেও রেহাই নেই। কপালে দুর্ভোগ যদি থাকে তাহলে দুর্ভোগ যেকোনো জায়গাতেই হতে পারে। যেমন মেট্রোতে আগুন লাগার মতন দুর্ঘটনা বা হঠাৎ চলতে চলতে বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা যখন তখন সঙ্গী হতেই পারে। সেই ক্ষেত্রে যাত্রীদের হুড়োহুড়ি হয় চোখে পড়ার মতো। বিপদ থেকে বাঁচতে গিয়ে আরও বেশি বিপদের দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখা যায় যাত্রীদের। সেই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কিভাবে সব সামলানো যায় তা নিয়ে বারবার বৈঠক করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এবার একেবারে মহড়া দিয়ে সম্পূর্ণ ব্যবস্থাপনা চালু করার সিদ্ধান্ত নিলো মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
চলতে চলতে হঠাৎ থেমে গেছে ট্রেন, মাইক্রোফোনে ঘোষণা হচ্ছে যাত্রীরা যেন কেউ হুড়োহুড়ি না করেন, ধীরে ধীরে যেন মেট্রোর ভিতর থেকে নেমে আসেন। না, এই পরিস্থিতি বাস্তবে ঘটেনি। এরকম ভাবেই নকল আপৎকালীন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে মেট্রোর মধ্যে যাতে এরকম পরিস্থিতি কখনো সৃষ্টি হলে কেউ অসুবিধায় না পড়েন তার জন্যই এই মহড়া। এই মহড়াতে সামিল করা হয় সেই সময় মেট্রোতে উপস্থিত থাকা সমস্ত যাত্রীদেরও। না, এই যাত্রীরা কেউই আসল যাত্রী নন। তাহলে ঘটনাটা খুলেই বলা যাক। মেট্রোকর্তাদের দাবি, এই মেট্রো যেহেতু সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত চলবে তাই এই পথটিকেই মহড়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকমাস ধরেই কামরাগুলিতে বালির বস্তা ভরে নির্ধারিত রুট ধরে নিয়মিত দৌড়াচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেক। কিন্তু সোমবার হঠাৎ এই বালির বস্তার বদলে যাত্রী নিয়ে ছুটতে শুরু করে এই মেট্রো। জানা গেছে, এই সমস্ত যাত্রীকে আসলে ভাড়া করে আনা হয়েছে একটি সংস্থা থেকে। মোট ৩০০ জন যাত্রী এইদিন সওয়ার হন মেট্রোতে। প্রত্যেকের জন্য বিশেষ পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে মেট্রোর পক্ষ থেকে।
মহড়ার বিষয় ছিল আপৎকালীন পরিস্থিতিতে কিভাবে খুব কম সময়ে মেট্রো থেকে যাত্রীদের বের করে আনা যাবে সেই নিয়ে। মাটির তলায় ছাড়াও উড়ালপথে দুটি মেট্রো স্টেশনের মাঝেও এই মহড়া চলে। বিভিন্ন জায়গায় মেট্রোর দরজা খুলতে ঠিক কতটা সময় লাগছে আর সেই দরজা দিয়ে যাত্রীদের বেরিয়ে আসতেও বা কতটা সময় লাগছে তাই খতিয়ে দেখা হয় সেদিন। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্টেশনের কাছাকাছি এলাকায় মেট্রোতে বন্দি যাত্রীদের বের করে আনার জন্য সময় বরাদ্দ হয়েছিল ১৫ মিনিট। সেই ১৫ মিনিটে কিভাবে ২০০০ জন যাত্রীকে বের করে আনা যাবে সেটাই ছিল চ্যালেঞ্জ। যাতে ভবিষ্যতে কখনো কোনো দুর্ঘটনার শিকার না হতে হয় যাত্রীদের সেই সুরক্ষার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছেন মেট্রোকর্তারা।