গতকাল লোকসভায় সরকারি তরফে সুন্দরবনে টাইগার সাফারি চালু করার প্রস্তাব রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। আমাদের রাজ্য তথা সারা দেশে ও বিশ্বের কাছে সুন্দরবন বিখ্যাত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্য। এখানে যদি পর্যটকদের টাইগার সাফারির মতো বন্দোবস্ত করানো যায়, তাহলে তা যথেষ্ট জনপ্রিয় হবে-এমনটা মনে করেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
লোকসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে তৃণমূলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দক্ষিণ আফ্রিকায় 'ওয়াক উইথ দ্য লায়ন' নামে লায়ন সাফারি হয়। সুন্দরবনের এরকম একটা টাইগার সাফারি চালু করা হলে সারা বিশ্বে সুন্দরবনের আকর্ষণ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এই বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারও। সুদীপবাবুর উক্ত কথার জের টেনে কেন্দ্রের বন ও পরিবেশমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে এই কাজ করা সম্ভব। তিনি তৃণমূলকে সবিস্তার প্রস্তাব তৈরী করে মন্ত্রকে আসতে অনুরোধ জানান। তিনি আশ্বস্ত করেন, কেন্দ্র এই ব্যাপারে নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখবে।
তিনি একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, ২০১০ সালের গণনায় দেখা গিয়েছে সুন্দরবনে ৭০ টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে, ২০১৪ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৬টি। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ১৯৬০ সালে সুন্দরবনের প্রায় ৬,০০০ বর্গ কিমি জুড়ে ম্যানগ্রোভ ছিল। ১৯৮৭ সালে তা কমে দাঁড়ায় প্রায় ৪ হাজার ৫৬ বর্গ কিমি। সেই সময় ম্যানগ্রোভ বাঁচানোর কোনো নিয়ম সেভাবে তৈরী হয়নি। এর পরেই তৎকালীন ভারত সরকার ম্যানগ্রোভ কনজারভেশন প্রোগ্রাম শুরু করে। তার পর ১৯৯৫ সালে এর পরিমান বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বর্গ কিমি। ২০০৭ সাল পর্যন্ত পাওয়া পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে এটি প্রায় ৪ হাজার ৯২১ বর্গ কিমি বেড়ে গেছে।
কেন্দ্র এবং রাজ্যের উদ্যোগে যদি সত্যি সত্যি সুন্দরবনে টাইগার সাফারি চালু হয়, তাহলে আমাদের রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে যে তা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ হবে তা বলাই যায়।