"বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর"-- কথাটা ক্ষেত্রবিশেষে বলি সকলেই। আর সেই বিশ্বাসই যখন অন্ধবিশ্বাসের আকার ধারণ করে তখন কিছু মানুষ জুটে যায় যারা তার সুযোগ নেয়। দুর্বল মানুষের সুযোগ নিয়ে তারা মানুষের উপর প্রয়োগ করে বশীকরণ কিংবা বুজরুকির। যেগুলোর আসলে কোনও দরকারই নেই মানুষের জীবনে। এটা করলে তোর পাপ ধুয়ে যাবে, ওটা করলে তোর প্রেমিক বশে থাকবে, স্বামী তোর পদতলে থাকবে- আরও কত না আশ্বাস দেয় সেই ভণ্ড সাধু কিংবা জ্যোতিষীরা। তারা কি আদৌ সাধু? সত্যিই যাঁরা সাধু তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই নয় বিক্রমদের। লড়াই তাদের বিরুদ্ধে যারা মানুষের মনে নানা ধরনের অসুখের সঞ্চার করে। লড়াই তাদের বিরুদ্ধে যারা শিকড়-বাকড়, আংটি দিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকাপয়সা আদায় করে। কিংবা কোনও অভিভাবক তার মেয়ের শরীর ভাল হচ্ছে না বলে কোনও ভণ্ড বাবার কাছে গেলে ভণ্ড বাবা মেয়েটিকে ভোগ করে। এদের বিরুদ্ধে বিক্রম, রজত, পার্থ, হিয়া আর ভোম্বলের লড়াই চলছে চলবে। বাস্তবেও যদি এহেন একটি দল সমাজের সকল অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এগিয়ে আসত তা হলে অনেক আধুনিক হতে পারতাম আমরা। কলিকালের ওই পঞ্চপাণ্ডবের আগমন ঘটতে চলেছে 'অলৌকিক না লৌকিক' সিরিজে। ১৬ টি গল্প নিয়ে ৩২ টি এপিসোডে দেখানো হবে এই সিরিজ। শনি ও রবিবার ঠিক রাত ৮ টায় টেলিভিশনের পর্দায়।
বিভিন্ন চরিত্রে রয়েছেন রাজর্ষি রায় (বিক্রম), সৌম্যদীপ সাহা (পার্থ), দেবপ্রিয় মুখোপাধ্যায় (ভোম্বল), সোহিনী বন্দ্যোপাধ্যায় (হিয়া), কার্তিকে ত্রিপাঠী (রজত)। এঁরাই লড়বে অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে। আর যাঁদের বিরুদ্ধে এদের লড়াই সেই দলে থাকবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়, সুপ্রিয় দত্ত, দেবেশ রায়চৌধুরী। এঁরাই ভিলেন এই সিরিজের। বিভিন্ন গল্পে ঘুরে ফিরে ধরা দেবেন এঁরা। সিরিজের আর্ট ডিরেক্টর জয়দীপ মুখোপাধ্যায়।
'অলৌকিক না লৌকিক'-এর শুটিং চলছে বোলপুরে। জিয়ো বাংলা পৌঁছে গিয়েছিল সেখানে। আপাতত দুটি গল্পের শুটিং হবে ওখানে। তারপর কলকাতায় ফিরবে 'এন আইডিয়াস ক্রিয়েশনস এন্ড প্রোডাকশনস প্রাইভেট লিমটেড'-টিম। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় আসছে এই ফাইনাইড সিরিজটি। এই প্রযোজনার দৌলতে এর আগে ধারাবাহিক গানের ওপারে, লাবণ্যর সংসার, অদ্বিতীয়া দেখেছেন দর্শক। এবার 'অলৌকিক না লৌকিক'। ভাল কনটেন্ট না পেলে কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন ইন্ডাস্ট্রির সকলের প্রিয় মানুষ বুম্বা দা। একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো টা খুব জরুরি বলে মনে করেছেন বলেই 'অলৌকিক না লৌকিক'।
এবার একেবারে নবীন মুখ নিয়ে কাজ করছেন তিনি। এটা কি চ্যালেঞ্জ নাকি রিস্ক? জিয়ো বাংলার তরফ থেকে এই প্রশ্ন গেলে তিনি জানান- "নতুনদের নতুন নতুন আইডিয়া। ওদের কাজ করার ধরনও আলাদা। চ্যালেঞ্জ বা রিস্ক যা'ই বলি না কেন বেশ ভাল লাগছে। ওরা অল্পবিস্তর কাজ করেছে টেলিভিশনে। তবে খুব বেশি পরিচিত মুখ নয় কেউই। এটা ওদের কাছেও একটা চ্যালেঞ্জের মতো। নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেল ওরা।"
বিক্রম ও তার টিম জানায়- "আমরা কারো বিশ্বাসের উপর আঘাত হানতে চাই না। আমাদের অভিযান তাদের বিরুদ্ধে যারা বশীকরণ করে মানুষকে ঠকায়, নানা ধরনের ভয় দেখিয়ে সেই বিপদ থেকে উদ্ধার করার নামে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষের মন দুর্বল করে দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। কেউ কোনও আংটি শিকড়-বাকড়ে বিশ্বাস করতেই পারে। কিন্তু যখন সেই বিশ্বাস অন্ধবিশ্বাসের পথে হাঁটতে শুরু করে তখন আমরা তাদের সামনে এসে দাঁড়াব। তাদের ভুলটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেব। এটুকুই আমাদের কাজ। কারো বিশ্বাসকে খাটো করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আর ১৩ জুলাই থেকেই আসছি আমরা। ১৩ তারিখটাকে ঘিরে যে কুসংস্কার মানুষের মনে অসুখের মতো বসে আছে তা নস্যাত করব আমরা।"
১৩ জুলাই থেকে টেলিভিশনের পর্দায় আসছে 'অলৌকিক না লৌকিক'। সম্প্রচারিত হবে প্রতি শনি ও রবিবার ঠিক রাত ৮ টায়।