কোথাও বেড়াতে গেলে সেই জায়গার স্মৃতি হিসেবে সকলেরই ইচ্ছে করে কিছু না কিছু নিয়ে আসতে। তা সে ওই স্থানের কোনো শিল্পকলাই হোক বা সেখানকার তৈরী জামাকাপড়, ব্যাগ ইত্যাদি। ভ্রমণের স্মৃতি সারা জীবন তাজা রাখতে কে না চায়? তাই স্মৃতি হিসেবে নানা জিনিস নিয়েও আসে সকলে। সেরকমই কুয়েতে ভ্রমণে যাওয়া এক ব্যক্তি সেই স্থানের স্মৃতি হিসেবে সেখান থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন একটি গোটা মিসাইল লঞ্চার। কিন্তু বিমানবন্দরে লঞ্চার নিয়ে প্রবেশ তো তিনি করে ফেলেছিলেন কিন্তু হলোটা কি? কেন আটক করা হলো তাকে?
বিমানবন্দরের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ধারালো অস্ত্র থেকে শুরু করে কোনোপ্রকার জ্বালানি নিয়ে কোনো যাত্রী বিমানে উঠতে পারবে না। তার আগেই তার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হবে সেই সব সামগ্রী। বিমানবন্দরের বিভিন্নধাপে চেকিং-এর ব্যবস্থা থাকে। তাই গোপনেও সেইসব জিনিস ক্যারি করা সম্ভব নয়। এই কথাটিই হয়তো জানতেন না সেই যাত্রী।
স্বাভাবিক নিয়মেই চেকিং চলছিল বিমানবন্দরের ভিতরে। এমন সময় এক যাত্রীর ব্যাগ স্ক্যান করার সময়েই চোখ কপালে ওঠে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের। দেখা যায় গোটা একটি মিসাইল লঞ্চার ব্যাগে করে নিয়ে যাচ্ছেন সেই যাত্রী। ওয়াশিংটনের বাল্টিমোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা আপাতত ভাইরাল। বিমানবন্দরের সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট থেকে জানানো হয়, গত সোমবার সকালেই এক যাত্রীর ব্যাগ থেকে উদ্ধার করা হয় এই মিসাইল লঞ্চারটি।
সেই যাত্রীকে জেরা করে জানা গেছে, উনি আসলে সেনাবাহিনীর কর্মী। বাড়ি টেক্সাসের জ্যাকসনভিলে। তাঁর ব্যাগে মিসাইল লঞ্চার কোথা থেকে এলো এই প্রশ্ন করাতে উত্তর মেলে, তিনি কুয়েতে বেড়াতে গেছিলেন। সেই স্থানের স্মৃতি হিসেবেই তিনি এই লঞ্চারটি নিয়ে যাচ্ছিলেন। এই রকেট লঞ্চারটি অকার্যকরী হওয়ার কারণে নির্বিঘ্নেই তিনি এই লঞ্চারটি সঙ্গে নিয়ে ঘুরছিলেন। জানা গেছে, ওই যাত্রীর ব্যাগ থেকে যে লঞ্চারটি পাওয়া গেছে তা আসলে গ্রিফিন মিসাইল লঞ্চার। এই ধরণের মিসাইলের বিশেষত্ব হলো এই মিসাইল যেকোনো জায়গা থেকেই ছোঁড়া যায়। ট্রান্সপোর্ট সিকিউরিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই জাতীয় অস্ত্র নিয়ে বিমানে ওঠার অনুমতি কখনোই কাউকে দেওয়া হয় না। তাই মিসাইল লঞ্চারটি বাজেয়াপ্ত করে তা স্টেট ফায়ার মার্শালের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মিসাইল লঞ্চারটি বাজেয়াপ্ত করার পর সেই যাত্রীকে বিমানে ওঠার অনুমতি দেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বেড়াতে গেলে সেখানকার স্মারক নিয়ে আসা আমাদের সকলেরই অভ্যেস। কিন্তু এক্ষেত্রে এটা খেয়াল রাখা উচিত যাতে সেই স্মারক বা সামগ্রী যেন অবৈধ কোনো সামগ্রী না হয় বা বিমানবন্দরের আইনের আওতার বাইরে না যায়। তাই স্মৃতি হিসেবে কোনো জিনিস আনার আগে ভালো করে দেখে নিন সেই জিনিসটি নিয়ে আপনি বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন কিনা।