বিভিন্ন সামুদ্রিক দেশ থেকে শুরু করে বরফের নিচের দেশের অস্তিত্বের সন্ধানে এবার আন্ডারওয়াটার রোভার পাঠাতে চলেছে আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসা| চেহারায় কৌতুহলের ছাপ বেশ স্পষ্ট বুয়্যান্ট রোভার ব্রুই-এর সাহায্যে এবার দুরের সামুদ্রিক দেশে প্রানের খোঁজ করবে নাসা| জানা গেছে, এই রোভারটিকে প্রথমেই পাঠানো হতে পারে জুপিটার গ্রহের চাঁদ ‘ইউরোপা’তে কিংবা শনিগ্রহের চাঁদ ‘এনসিলেডাস’-এ| যেহেতু এইসব জায়গায় বরফের নিচে জলের রাশি রয়েছে এমনটাই সন্দেহ করেছেন বিজ্ঞানীরা, তাই নতুন করে এইসব জায়গায় রোভার পাঠানোর কথা ভাবা হয়েছে|
জানা গেছে, ব্রুই-এর যা ক্ষমতা তা দিয়ে সে অনায়াসেই সমুদ্রের উপরে জমে থাকা বরফের পাহাড় ভেঙে খোঁজ আনতে পারবে সেইসব জায়গা যা বাইরে থেকে দেখা সম্ভব নয়| ‘ব্রুই’ প্রজেক্টের প্রধান বিজ্ঞানী কেভিন হ্যান্ড জানিয়েছেন, ঠিক যেই জায়গাটিতে জল জমে বরফ হচ্ছে ঠিক সেই জায়গাটিতেই সবচেয়ে বেশি আগ্রহ রয়েছে তাদের|
এরআগে ব্রুইকে পাঠানো হয়েছিল আলাস্কা এবং উত্তর মহাসাগরে ট্রায়ালের জন্য| এই ট্রায়ালটি করা হয়েছিল দেখার জন্য যে, নতুন এই রোভারটি অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়ায় কতটা টিকে থাকতে পারে| জানা গেছে, রোভারটির দুটি চাকা তাকে সাহায্য করবে জলের নিচে জমে থাকা বরফের উপর দিয়ে সুন্দরভাবে গড়িয়ে যেতে| বিজ্ঞানীদের মত, বেশিরভাগ সময়ে দেখা যায় সামুদ্রিক প্রাণ জন্ম নেয় বরফ আর জলের মিলনের ঠিক মধ্যবর্তী জায়গাটিতেই|এই কারণের ফলেই ব্রুইকে এই জায়গায় পাঠানোর কথা চিন্তা করছে নাসা| এই প্রজেক্ট-এর প্রধান ইঞ্জিনিয়ার অ্যান্ডি ক্লেশ জানান, এইধরনের নিমজ্জিত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে জায়গা নির্বাচন করা অত্যন্ত কঠিন| কিছুক্ষেত্রে জলের মধ্যে থাকা প্রচলিত শক্তির ফলে সেই প্রযুক্তির যথেষ্ট ক্ষতিও হয়ে যেতে পারে| এইক্ষেত্রেও যথেষ্ট সতর্ক হয়েই রোভারটিকে পাঠানো হয়েছিল ট্রায়ালের জন্য|
এখনও পর্যন্ত পরীক্ষায় সম্পূর্ণ সফল হতে পারেনি ব্রুই| তাকে নিয়ে এখন নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে| তার সাথে যুক্ত করা দুটি এইচডি ক্যামেরার মাধ্যমে সর্বক্ষণ তার উপর নজর রাখছে নাসা| প্রথমে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে সমুদ্রের মধ্যে ছাড়া হলেও পরবর্তীকালে আর শিকলের প্রয়োজন পড়বে না, মত নাসার বিজ্ঞানীগণের|