কথায় বলে, পৃথিবী বৈচিত্র্যময়।আর এই বৈচিত্র্যতা কোনোদিন কমার নয়। বরং নতুন নতুন প্রজাতির আত্মপ্রকাশের ফলে দিন দিন বেড়েই চলেছে এই বৈচিত্র্য। প্রকৃতির কোলে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে কোনো না কোনো প্রাণী। কিছু প্রাণীর পরিচিতি ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে রয়েছে। কিছু প্রজাতি আবার আমাদের কাছে অচেনা। এছাড়াও নতুন প্রজাতি আবিষ্কৃত হচ্ছে মাঝে মধ্যেই। প্রাণীবিজ্ঞানীরা সর্বক্ষণ সজাগ দৃষ্টি দিয়ে রাখেন প্রাণীজগতের উপর।কখন কোথায় নতুন কোন প্রজাতির প্রাণীর খোঁজ মিললো তা জানার সঙ্গে সঙ্গেই জানানো হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।সেরকমই নতুন প্রজাতির কচ্ছপের সন্ধান সম্প্রতি নিয়ে এসেছে প্রাণীবিজ্ঞানীরা।সম্প্রতি খোঁজ মিলেছে এক বিরল প্রজাতির কচ্ছপের। দুইমুখযুক্ত সেই কচ্ছপের কথা আজ জেনে নেওয়া যাক...........
মালয়েশিয়ার মবুল দ্বীপে সম্প্রতি খোঁজ মিলেছে একটি দুইমুখযুক্ত সবুজ বর্ণের কচ্ছপের। সদ্যোজাত এই সামুদ্রিক কচ্ছপকে যদিও বেশিদিন বাঁচানো যায়নি তবে এই প্রাণীর খোঁজ মেলার পর থেকেই এই প্রজাতির বাকি সদস্যের খোঁজ করতে মাঠে নেমে পড়েছে প্রাণিবিজ্ঞানীরা। গত সোমবার উপকূলবর্তী বালুকাময় এলাকা থেকে খোঁজ মেলে এই প্রজাতির কচ্ছপের।এই এলাকায় খোঁজ চালিয়ে একটি কচ্ছপের বাসাও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেই বাসা থেকে মোট ৯০টি কচ্ছপ উদ্ধার করেছেন তারা।
মেরিন সাইন্স নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার কনসারভেশন ম্যানেজার ডেভিড ম্যাকান জানিয়েছেন, প্রথম ছানাটিকে দেখেই তিনি মুগ্ধ হয়ে গেছিলেন কারণ সেই ছানাটির ছিল দুটো মাথা।এই কচ্ছপ আবিষ্কারের পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে বিজ্ঞানমহলে। দুই মাথা থাকার ফলে শরীর ভারী হয়ে যাওয়ার কথা সেই কচ্ছপ ছানার। তাহলে সেই সমদ্রের জলে সাঁতার কিভাবে কাটতো? এই প্রশ্নই আপাতত ঘুরছে বিজ্ঞানীদের মাথায়। এই প্রসঙ্গে ডেভিড জানিয়েছেন, প্রতি সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরে সাঁতার কাটার জন্য একধরণের ফ্লিপার থাকে।এই দুইমুখযুক্ত কচ্ছপের ক্ষেত্রে তার ডানদিকের ফ্লিপার নিয়ন্ত্রণ করতো তার ডানদিকের মাথা এবং বামদিকের ফ্লিপার নিয়ন্ত্রণ করতো তার বামদিকের মাথা। তাই সাঁতার কাটার সময় কচ্ছপটি কোনোরকম অসুবিধার সম্মুখীন হয়নি।
নতুন এই প্রজাতির কচ্ছপ পেয়ে উচ্ছসিত সকলেই। ডেভিড যে সংস্থার কনসারভেটিভ ম্যানেজার সেই সংস্থার চেয়ারম্যান জানান, এর আগে প্রায় ১৩ হাজারের ও বেশি সামুদ্রিক কচ্ছপ তারা উদ্ধার করেছেন। তবে তারাও একবাক্যে স্বীকার করে নিয়েছেন এইজাতীয় দুইমুখযুক্ত কচ্ছপ তারাও প্রথমবার দেখছেন।এক পশুচিকিৎসক জানান, এই কচ্ছপটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই কচ্ছপছানাটি মারা যায়। তার মৃত্যুর কারণ এখনো স্পষ্ট না হলেও সেই চিকিৎসক জানিয়েছেন, এর আগে ২০১৪ সালেও মালয়েশিয়ার পূর্ব উপকূলে একবার খোঁজ মিলেছিল দুইমুখযুক্ত কচ্ছপের।সেই কচ্ছপটি বেঁচেছিল তিনমাস।