সিমলিপালে সাপ

পৃথিবী জীব বৈচিত্রে পূর্ণ। পৃথিবীর কোনায় কোনায় ছড়িয়ে রয়েছে নানা পশুপাখি থেকে শুরু করে নানা প্রাণী। কিছু প্রাণীর পরিচয় আমাদের কাছে রয়েছে আর কিছু প্রাণীর পরিচয় আমাদের কাছে নেই। কিছু প্রাণীর খোঁজ পাওয়া যায় অনেক দেরিতে। তার আগে হয়তো তাদের অনেক প্রজন্ম পৃথিবীর বুকে বসবাস করে ফেলেছে। সেরকম একটি বিরল প্রজাতির সাপের খোঁজ এবার মিলেছে সিমলিপালে। সর্প বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রায় ১০০ বছর পর খোঁজ মিলেছে এই সাপটির।

লাউডগা প্রকৃতির এই সাপটি আগেও পৃথিবীর বুকে বাস করতো। কিন্তু মাঝে এই সাপটির কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছিলো না। সেই সময় ধরে নেওয়া হয় সাপটি হয়তো বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু পুরো একশো বছর পরে আবার এই সাপটির খোঁজ মেলাতে বেশ অবাক বিজ্ঞানীগণ। জানা গেছে, সমগ্র পৃথিবী জুড়ে প্রায় ৯ রকমের লাউডগা প্রজাতির সাপের খোঁজ মিলেছে। আর এই প্রজাতিটি খুঁজে পাওয়ার পর সেই সংখ্যা দশে পৌঁছালো। সর্প বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই নতুন প্রজাতিটির সাপটি আসলে 'এশিয়ান ভাইন' প্রজাতির সাপ।বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই প্রজাতির সাপ ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমার এইসব অঞ্চলেই একমাত্র দেখতে পাওয়া যায়। লাউডগা নামে পরিচিত এই সাপটির আদি বাড়ি কিন্তু ওড়িশা। ওড়িশার পর এরা ধীরে ধীরে রাজস্থান, মহারাষ্ট্রের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ এলাকায় এই সাপটির প্রথম দেখা মেলে।

গেরুয়া বাদামি ডোরাকাটা এই সাপটির পেটের কাছে লালচে-কমলা রঙের ছোপ রয়েছে। এই চিহ্ন দিয়েই সাপটির প্রজাতি সনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি ন্যাচারাল হিস্ট্রি জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এই সাপটির জিনের বৈশিষ্টের মৌলিকতা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই সাপের প্রজাতি নিয়ে পর্যালোচনা করার সময় অনেক বিজ্ঞানী মনে করেছিলেন এই সাপটি তারা হয়তো আগেও দেখেছেন। অনেক বিজ্ঞানী জানান, ২০০৯ সালে এই সাপটির প্রজাতির দেখা তারা পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানা যায় সেই সাপটির সাথে এই সাপটির কোনো মিলই নেই। এই সাপটির পূর্বপুরুষের দেখা মিলেছিল আজ থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে। ২০০৯ সালে সিমলিপাল এলাকায় যে সাপটির খোঁজ মিলেছিল সেই সাপটিকে নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানা যায় তা সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রজাতির সাপ। নতুন এই সাপটির নামকরণ করা হয়েছে আহেতুল্লা লাউডঙ্কিয়া। ট্যাক্সোনোমির সমস্ত নিয়ম মেনেই এই নামকরণ করা হয়েছে, মত সর্প বিশেষজ্ঞদের।   

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...