শরীরের মূল উপাদান হল রক্ত আর সেই রক্তের মূল উপাদানগুলির মধ্যে অন্যতম হলো আয়রন। রক্তে আয়রনের পরিমান কমে গেলে দেখা দিতে থাকে রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া। যার প্রভাব সরাসরি পড়ে শরীরের উপর। আয়রন কমলে কমতে শুরু করে হিমোগ্লোবিন। এই সকল কথা আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কারোরই অজানা নয়। কিন্তু অজানা কিছু কথা সম্প্রতি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন চিকিৎসকগণ। তারা জানিয়েছেন আমাদের জীবনধারায় সামান্য কিছু বদল আনলেই বাড়তে পারে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই অ্যানিমিয়া সম্পর্কে গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের আনাচকানাচ সকলেই যথেষ্ট অবগত। কিন্তু তার পরেও ঘরে ঘরে হানা দিতে পারছে এই রোগ। পুরুষদের তুলনায় মহিলারা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, জীবনযাত্রায় সহজ কিছু বদলই বদলে দিতে পারে হিমোগ্লোবিনের সংখ্যা। ডালভাত আজকের দিনে প্রায় অনেক বাড়িতেই খাওয়া হয় না। একদিকে ডায়েট করার জন্য খাচ্ছেন মিল সাপ্প্লিমেন্ট তো অন্যদিকে বাইরে বেরোলে মনপসন্দ জাঙ্কফুড। চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এই অভ্যেসে বদল না আনতে পারলে সমস্যা রয়েছে। খাদ্যতালিকায় অল্প পরিবর্তন, জাঙ্কফুডের বদলে হালকা ঘরের খাবার প্রভৃতিই পারে অ্যানিমিয়ার হাত থেকে একটা মানুষকে রক্ষা করতে। এগুলি ছাড়াও যেসব ক্ষতিকর অভ্যেস চিকিৎসকেরা ব্যদলানোর জন্য বলেছেন তা হলো-
১) রাত্রের দিকে চা বা কফি যতটা কম খাওয়া যায় ততই মঙ্গল।কারণ রাতের খাবার খাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে চা কফি কিংবা কোলা এইসব খেলে আয়রন শরীরে ঠিকমতো শোষিত হতে পারেনা। ফলে রক্তাল্পতার সমস্যা জাঁকিয়ে বসতে পারে।
২) খালি পেতে ফল খেতে একেবারেই না করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা জানাচ্ছেন, খাবার খাওয়ার পরে ফল খেলে ফলের মধ্যে উপস্থিত ভিটামিন সি শরীরের আয়রন শোষণকে ত্বরান্বিত করে থাকে। এই কারণেই ভাতের সাথে লেবু হওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
৩) কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে যদি ইসবগুল খাওয়া আপনার অভ্যেস হয়ে থাকে তাহলে খাবার খাওয়ার ঘন্টা দুয়েক আগে কিংবা ঘন্টা দুয়েক পরেই তা খাওয়া ভালো। তা না হলে ইসবগুলের মধ্যে থাকা ফাইবারে খাবারের পুষ্টিটুকু আটকে যেতে পারে।
৪) জাঙ্কফুড যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। পুষ্টিগুণের বিচারে এই খাবারের কোনো দাম নেই তাই যতটা সম্ভব এই খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। কিন্তু মুখরোচক হওয়ার কারণে অনেকেই ফাস্টফুড সম্পূর্ণভাবে পরিত্যাগ করতে পারেন না। এই ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সপ্তাহে একবার বা দুইবার ফাস্টফুড খাওয়া যেতে পারে। তবে তার বেশি নয়।
৫) প্রতিদিন বাড়ির খাবার খাওয়ার অভ্যেস করুন। সম্ভব হলে অফিসের খাবারও বাড়ি থেকে বানিয়ে নিয়ে যান। বিশেষজ্ঞরা দিনে একবার হলেও বাড়িতে পাতা টকদই খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে শরীর যেমন সুস্থ থাকবে সেরকম অ্যানিমিয়াতে ভোগার সম্ভাবনাও অনেকটা কমে যাবে।