গ্রীষ্মের ছুটি শেষ হওয়ার পর স্কুল খুললেই নতুন নিয়মের মুখে পড়তে হচ্ছে ফ্রান্সের সমস্ত স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের। সমস্ত রকমের স্মার্ট ফোন, ট্যাবলেট, স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহারে সরকারী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এমনকি ব্রেকের সময়েও ফোনজাতীয় কোনো কিছুই ব্যবহার করা যাবে না। গোটা ফ্রান্সে প্রযোজ্য হল এই আইন।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাকরন এই বছর জুলাইতে এই আইনে সম্মতি প্রদান করেন। কার্যকর হল স্কুলের সেপ্টেম্বরে, গরমের ছুটির পর থেকে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকেই মোবাইল ,সেলফোনের ওপর একটি নিষেধাজ্ঞা আইন ফ্রান্সে বলবৎ করা হয়েছিল। কিন্তু তা এমন ব্যাপক ভাবে প্রয়োগ করার ভাবনা আসেনি। সেই আইনে বলা হয়েছিল ক্লাস চলাকালীন ছাত্রছাত্রীরা মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না। সদ্য পাস হওয়া নতুন আইন অনুযায়ী স্কুল চলাকালীন ছাত্র ছাত্রীরা কেউ মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না। তাঁদের মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট স্কুলের লকারে জমা রাখতে হবে। স্কুলের দায়িত্ব হবে ছাত্রছাত্রীদের ফোনের ব্যবহার থেকে কীভবে দূরে রাখা যায় তা দেখা। সরকারীভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে এ ব্যাপারে।
বিশেষভাবে সক্ষম ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষেত্রে এই আইনে ছাড় দেওয়া হয়েছে।
ফ্রান্সের শিক্ষামন্ত্রী এই আইনকে একুশ শতকের জন্য জরুরী আইন বলে মন্তব্য করেছেন। দেশের ১২ মিলিয়ান ছাত্রছাত্রীকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাবে। অনেকক্ষেত্রেই মোবাইল ব্যবহারের কারনে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়ছে। মাত্রাতিরিক্ত গেম আর ইন্টারনেটের নেশা কিশোর-কিশোরীদের সমাজ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে। অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। বন্ধুহীন থাকা, কারুর সগে কথা না বলা, বাইরের মেলামেশা বন্ধ করে দেওয়া, এভাবে তাদের স্বাভাবিক প্রবৃত্তিও বদলে যাচ্ছে। খেলাধূলায় আগ্রহ হারানোয় শরীর চর্চা বন্ধ। ছাত্রছাত্রীদের কাউন্সিলিং করাতে হচ্ছে মোবাইল এর নেশা ছাড়ানোর জন্য।
ফ্রান্স ছারাও ইউরোপের আরও বেশ কয়েকটি দেশ মোবাইল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে মোবাইল নিষিদ্ধ হওয়ার পর ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক ফলাফলেও উন্নতি চোখে পড়েছে।