নেপালের তিহার উৎসবে কুকুরই দেবতা
মহাভারতের শেষ পর্ব।পঞ্চ পাণ্ডব আর দ্রৌপদী চলেছেন স্বর্গের পথে। মাঝে ভাইয়েরা সঙ্গ ছাড়লেও, চলে যায়নি সে। একটি কুকুর। সেই শুরু মানুষ আর কুকুরের ‘ তেরি মেরি কহানি’।
কথায় আছে, সব কুকুরেরই নাকি একদিন দিন আসে।নেপালে এ কথা সবসময় সত্যি।
পোষ্য হোক বা রাস্তার কুকুর, তাদের জন্য একটা গোটা উৎসবের দিন। উৎসবের নাম ‘কুকুর তিহার। আলোর উৎসব দেওয়ালির পরের দিনটি পালিত হয় এই উৎসব।
‘তিহার’ অর্থে উৎসব, ‘কুকুরদের উৎসব’।নেপালীদের কাছে এই দিন ওরা তাদের বিশ্বস্ত বন্ধু ও অভিভাবক কুকুরদের সম্মান জানান।যেই কুকরই মানুষকে প্রথম স্বর্গের রাস্তা চিনিয়েছিল।
কুকুর, সে রাস্তার হোক আর বাড়ির- সবার গলায় জড়িয়ে থাকে হলুদ গাঁদা মালা। কপালে লাল সিঁদুরের টীকা। চোখে মালিকের প্রতি সমুদ্র সমান ভালোবাসা।
হিন্দু ধর্ম মতে, মৃত্যুর দেবতা যম রাজের দূত কুকুর। নেপালের মানুষের বিশ্বাস কুকুরকে দেখভাল করলে যম রাজের সুনজরে পড়া যেতে পারে। এড়ানো যায় মৃত্যু। দীর্ঘ জীবন লাভ হয়।
ভারতে দীপাবলী-র পিঠোপিঠি এই উৎসবে কুকুরদের পাশাপাশি গরু ও কাকদের পূজো করা হয়। সন্ধ্যায় পূজিত হন দেবী লক্ষী। কাছের মানুষদের উপহার দেওয়া নেওয়া চলে।
কুকুরদের পছন্দের খাবার তাদের ওইদিন মাতিয়ে রাখা হয়। ডিম, দুধ,চীজ, মাংস, ফল, কুকিস থাকে সেই তালিকায়।
ঋগ্বেদে আছে, কুকুরদের জননী ‘সামসারা’ দেবরাজ ইন্দ্র কে সাহায্য করেছিল তাঁর হারিয়ে যাওয়া গবাদি পশুর পাল খুঁজে দিতে।
ভৈরব- দেবাদিদেব মহাদেব এর এক অবতার। তাঁর বাহনেও কুকুর। যম পুরীর দ্বার রক্ষকও দুই কুকুর।
নেপালীদের এই উৎসব পশুপ্রেম ও মানবতার এক অন্যতম উদাহরণ।
দেশের সীমানা পেরিয়ে ধরা দিয়েছে এই উৎসব। ২০১৬ সালে মেক্সিকো পালন করেছিল ‘কুকুর তিহার’।