ভিমরুল তার জাতভাই?
উঁহু, নেই তার হুল-দাঁত ভাই!
পাকা জাম তার জাতভাই?
না না, ভেবে দেখো দিন-রাত ভাই!
ফলটার নাম পাবে শেষমেশ
আরে আরে পেয়ে গেছো! বেশ বেশ!
ছোটবেলায় ধাঁধার আসরে এই জবরদস্ত ধাঁধার অবধারিত উত্তরটি হত ‘জামরুল’। তার দাঁত-হুল না থাকলে মাথায় আছে চুল। সাদা-ধবধবে জামরুলে কামড় বসালেই মিঠে জল! গন্ধটিও মন টানে। এক সময় ছোটদের গরমের ছুটি মানেই ছিল পাড়ার জামরুল গাছে লাফাই-ঝাঁপাইয়ের দিন। সে দিন আজ গেলেও, বাজারে রয়ে গিয়েছে জামরুল। এখন আবার নজর কাড়ছে নতুন অবতারে।
জামরুল বটে, কিন্তু ঠিক জামরুল যেন নয়। আপেল ভাবতে গিয়েও দেখে যায় ঠকে গেলাম, সে আসলে অন্য কেউ। দিশি নাম ‘লালজামরুল’।
গত কয়েক বছরে বাজারে এসেছে এক নতুন জাতের জামরুল। দেখতে কিছুটা জামরুলের মতো হলেও লাল রং ফলটিকে বেশ আলাদা করে তুলেছে। স্বাদে মিষ্টি। এই জামরুল এক সময় শুধু মাত্র থাইল্যান্ড থেকে আসত এদেশে। এখন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বহু বাজারে পাওয়া যায় থাই-জামরুল। উন্নত জাতের এই জামরুলে অনেক খাদ্যগুণ রয়েছে।
লাল জামরুলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, আয়রন, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সালফার ইত্যাদি রয়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে, ত্বকের সমস্যা দূর করার ক্ষমতা রয়েছে। ডায়বেটিক রোগীদের জন্য এই ফল খুব উপকারী। এই জামরুল খেলে চোখের তলার কালো দাগ দূর হয়ে যাবে। এই ফল খেতে পারলে বাতের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
গ্ৰীষ্ম ও বর্ষাকালে গাছে এই ফল ধরে। কিন্তু বেশি বর্ষা হলে থাই-জামরুলের ক্ষতিও হতে পারে। এছাড়াও এই ফল পাকলে স্বাদ কমে যায়, ফলটা দেখতে খারাপ হয়ে যায় ও পরে পচতে শুরু করে। এই জাতের জামরুল থাইল্যান্ড ছাড়াও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইনের মতো দেশগুলোতে প্রচুর পরিমাণে চাষ হয়। এখন ভারত ও বাংলাদেশেও থাই-জামরুলের চাষ হয়।