যাঁরা ৯০'এর প্রজন্ম তাঁরাই জানবেন ছোটোবেলায় 'শক্তি...শক্তি...শক্তিমান' বলতে বলতে ও বনবন করে ঘুরতে ঘুরতে চিৎপটাং হওয়ার কি মহিমা! ৯০-এর দশকে যখন ঘরে ঘরে টেলিভিশন-অনুষ্ঠানের রমরমা, সেইসময় প্রত্যেক রোববার ঠিক বেলা বারোটা বাজলেই কচিকাঁচা তো বটেই বাড়ির বড়রাও হাঁ করে দেখতেন ভারতের সর্বপ্রথম সুপারহিরো 'শক্তিমান'-কে। এখনকার প্রজন্ম হয়তো সেই শক্তিমানের সাজসজ্জা এবং চোখ ধাঁধানো গ্রাফিক্সের অনুপস্থিতিকে দেখে চাপা বিদ্রুপ করবেন, কিন্তু সেইসময় 'শক্তিমান' ছিল আপামর ভারতবাসীর কাছে এক অফুরন্ত আবেগ। জানা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই ফের ফিরতে চলেছে 'শক্তিমান'। নাইন্টিজ নস্ট্যালজিয়া ফিরিয়ে থাকছেন পুরনো 'শক্তিমান'-এর প্রায় সব কলাকুশলীরাই।
'শক্তিমান' মুকেশ খান্না এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, আমরা শক্তিমান ধারাবাহিকটিকে নতুন করে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। এই নিয়ে কয়েকটি চ্যানেলের সঙ্গে প্রাথমিক কথাও হয়েছে। তবে কবে থেকে কাজ শুরু হবে সে বিষয়টি এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। টেলিভিশন না ওয়েব সিরিজ হিসেবে মুক্তি পাবে এটি, সেটিও এখনও ঠিক করা হয়নি।
শক্তিমানের চরিত্রে যে তিনিই অভিনয় করবেন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুকেশ। তিনি জানান, এজন্য তিনি ৮ কেজি ওজনও ঝরিয়ে ফেলেছেন। মুকেশ খান্না যখন 'শক্তি...শক্তি...শক্তিমান' বলতে বলতে এবং সাইক্লোনের মত ঘুরতে ঘুরতে বুক-জোড়া বিরাট সূর্য নিয়ে পর্দায় দাঁড়াতেন, বিশ্বাস করুন তখন আর কিচ্ছুটি লাগত না। 'পণ্ডিত গঙ্গাধর বিদ্যাধর মায়াধর ওমকারনাথ শাস্ত্রী' -এক সাধারণ চিত্র সাংবাদিকই আপদে বিপদে নিমেষে হয়ে উঠতেন সর্বশক্তিধর 'শক্তিমান'। 'শক্তিমানকে নকল করতে গিয়ে আহত অমুক জায়গার তমুক শিশু'- এমন শিরোণামে বহু খবরই ধরা পড়ত খবরের পাতায়। তাছাড়া শক্তিমান খেলনা, শক্তিমান লজেন্স, এসব আকর্ষণ তো ছিলই। ১৩ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ থেকে টানা সাত বছর চলেছিল এই সুপারহিরো-কেন্দ্রীক ধারাবাহিকটি। ২০০৮-এ সমাপ্তিটাও ছিল খানিক অসমাপ্ত। ভিলেন কিলবিষ, যার মুখের বিখ্যাত সংলাপ ছিল 'অন্ধেরা কায়েম রহে', তাকে অনন্ত অন্তরীক্ষে ছুঁড়ে ফেলতে পারেনি শক্তিমান, এজন্য খুদেদের মনে জমেছিল দুঃখের মেঘ, যা কাটতে বেশ খানিক সময় লেগেছিল। সেই অসমাপ্ত কাজই সম্পূর্ণ করতে, অন্ধকার দূরে সরাতেই কি তাহলে ফের ফিরছে 'শক্তিমান'? আশা করা যায় এ প্রশ্নের উত্তর খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবে এ প্রজন্ম, হতে পারে তারাও 'শক্তি...শক্তি...শক্তিমান' বলতে বলতে ও বনবন করে ঘুরতে ঘুরতে চিৎপটাং হয়ে যাবে!