স্ক্রাইব হয়ে নজির গড়েছেন আইটি কর্মী

মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ব্যাঙ্গালুরুর তথ্য প্রযুক্তি কর্মী পুষ্পা। কর্তব্যপরায়ণ এবং ইচ্ছা শক্তির দিক থেকে পুষ্পার উদাহরণ ভরসা নিয়ে আসে মানবিকতা বোধের ওপর। ৩১ বছর বয়সী পুষ্পা এন এম পেশায় আইটি কর্মী, তবে তার বড় পরিচয় তিনি একজন স্ক্রাইব। বিগত ১১ বছরে ৭০০ টি পরীক্ষায় শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সাহায্য করে পরীক্ষায় লিখেছেন পুস্পা। ২০০৭ সাল থেকে পুষ্পা স্ক্রাইব হিসেবে পরীক্ষায় লিখে সাহায্য করা শুরু করেন। পুষ্পার ভাষায় তাঁর স্বাভাবিক দৃষ্টি শক্তি এবং বাকশক্তির নিজেকে অবশ্যই ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। যে সব শারীরিক প্রতিবন্ধীরা নিজেদের মত করে মেধাসম্পন্ন কিন্তু নিজেদের লিখবার ক্ষমতা নেই, তাদের পাশে থেকে তাদের জন্য কিছু করতে পারার আনন্দই পুষ্পার স্ক্রাইব হবার অনুপ্রেরণা যোগায়। বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যক্তিরাও যেন নিজেদের যোগ্যতার ওপর ভরসা রাখে সেই পথই দেখিয়ে দেন তিনি।

প্রতিবন্ধীদের কাছে নিজেকে তাদের চোখ, হাত এবং কান নামে পরিচয় দেন তিনি। ২০০৭ সালে একজন প্রতিবেশীর অনুরোধে তিনি প্রথমবারের মত একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর পরীক্ষায় সাহায্য করে লিখে দেওয়া শুরু করেন। ৬ বছর থেকে ৬০ বছর বয়সী বিশেষ ভাবে সক্ষমদের হয়ে স্ক্রাইব করেছেন তিনি। স্ক্রাইব হয়ে পরীক্ষায় বসবার আগে পুস্পা বন্ধুত্ব করে নেন পরীক্ষার্থীর সাথে। পরীক্ষার হলে প্রশ্ন বুঝিয়ে দিতে কখনো মুখে বলে বা ইশারায় বুঝিয়ে দেবার সহায়তা নেন তিনি। স্ক্রাইব হতে গেলে প্রয়োজন ধৈর্য্য  আর সমন্বয়ের গুণ বলে জানিয়েছেন পুষ্পা। পরীক্ষা হলে শিশু এবং বয়স্ক পরিক্ষার্থীদের প্রশ্ন বুঝিয়ে দেবার জন্য অনেক সময় একই প্রশ্ন একাধিকবার পুনরাবৃত্তি করতে হয়। সে ক্ষেত্রে সময় এর দিকে লক্ষ্য রাখা, পরীক্ষার্থীকে বিচলিত না করা আর মানসিক স্থিতি বজায় রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন পুষ্পা। আইটি প্রফেশনাল হয়েও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের পরীক্ষায় লেখার জন্য সাহায্য করার জন্য আগে ভাগেই অফিসে ছুটি দেবার কথা বলেন তিনি।  

অভাবের কারণে ছোট বেলায় পুষ্পা কে পরীক্ষা রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল সপ্তম শ্রেণীতে। পরে একজন প্রতিবেশীর সহায়তায় আবার পড়ালেখা শুরু হয় তাঁর। উপার্জনক্ষম হয়ে উঠলে তিনি মানুষকে সাহায্য করতে পারবেন এ বিশ্বাস তার সেই সময় থেকেই।  ২০১৮ সালে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছ থেকে নারীশক্তি সম্মাননা গ্রহণ করেন পুষ্পা। স্ক্রাইবিং এর পাশাপাশি দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়েও কাজ করে যাচ্ছেন ব্যাঙ্গালুরুর পুষ্পা। 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...