‘প্রি-স্কুল-পিকাসো’

ছোট্ট জীবনের শুরু থেকেই কাটছে লাইমলাইটে। জার্মান মিডিয়া তার নাম দিয়েছে ‘প্রি-স্কুল-পিকাসো’।

যদিও ক্যামেরার সামনে আসতে সে একেবারেই স্বচ্ছন্দ নয়। তবু এই বয়সেই দেশ তো বটেই, বিদেশেও সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছে।

নাম মিকালি আকবর। ধাম বার্লিন। সাত বছরের এই জার্মান শিশু সারা বিশ্বের রং-তুলির দুনিয়ায় ‘বড় খবর’।

হতে চায় ফুটবলার। বাকিটা সাত বছর বয়সের যে কোনও শিশুর মতোই। জন্ম ২০১২তে। তবে এই বয়সেই ছবির দুনিয়ায় সে আলোড়ন তুলেছে। ফ্রান্স, জার্মানি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও সে তুমুল জনপ্রিয়।

মিকালি’র বাবা করিম আকর জানিয়েছেন, ‘ মিকালি যে আর পাঁচটা বাচ্চার থেকে আলাদা সেটা ছোটবেলায় বোঝা যায় না।তবে আঁকার দিকে মিকালির আগ্রহ ছিল। তার চার বছরের জন্মদিনে তাকে একটা ক্যানভাস আর কিছু রং উপহার দেওয়া হয়। কয়েকদিন পর সেই ক্যানভাস চোখে পড়ে।’

art1

করিমের কথায়, ‘ ক্যানভাসটা দেখে আমি ভেবেছিলাম বোধহয় আমার স্ত্রী এঁকেছে। এত পরিনত রঙের ব্যবহার আর রেখার টান। আমার মাথাতেই আসেনি মিকালির কথা। কিন্তু তার পরের ছবিগুলো দেখে আমি অন্যরকম ভাবতে বাধ্য হই। জানতে পারি সমস্ত ছবি মিকালির আঁকা’।

মিকালির সাম্প্রতিকতম ছবি ১২ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে। দুঃস্থ শিশুদের সাহায্যের জন্য সেই টাকা দান করা হয়েছে।  

 তার ছবি আনাকার ধরণ একেবারেই আলাদা। কখনও বাবার বক্সিং গ্লাভস, কখনও রান্নাঘরের চামচ- এসব দিয়ে ক্যানভাসে রং লাগানোর নিত্য নতুন পরীক্ষা-নিরিক্ষা তার চলতেই থাকে। অ্যাবসট্র্যাক্ট এক্সপ্রেশনিস্ট ধরনের ছবি। আমেরিকান শিল্পী জেন-মাইকেল-বাসকুইট, মাইকেল জ্যাকসন এবং পোলক তার প্রিয় শিল্প। কল্পনা এবং রঙের ব্যবহার তার ছবিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

বছরের শুরুতেই তার একটি আঁকা  বার্লিন আর্ট গ্যালারিতে জায়গা করে নিয়েছে। ছবি দেখে মুগ্ধ দর্শকরা। যখন জেনেছেন শিল্প প্রাইমারী স্কুলের গন্ডিও পার হয়নি এখন তখন কার্যত বাক্যহীন হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কুর্নিশ জানিয়েছে শিশু চিত্রকরকে।

তবে মিকালি কিন্তু বড় হয়ে অন্য কিছু হতে চান,। তার সেই স্বপ্নে রং-তুলি-ক্যানভাস নয়, আছে শুধু ফুটবল। বড় হয়ে ফুটবলার হতে চায় সে। তার কথায়, ‘ ছবি আঁকতে অনেক সময় লেগে যায়।একটা জায়গাতেই আটকে থাকা। তার চেয়ে অনেক ভাল ফুটবল’। তার স্কুল টিম ৮-০ গোলে জিতেছ এমন স্বপ্ন সে দেখে।  

সোশ্যাল মিডিয়াতেও মিকালি রীতিমত সেলিব্রিটি। শুধুমাত্র ইনস্টাগ্রামেই তার ফলোয়ারের সংখ্যা ৪০ হাজার। এই বছর মার্চে সে প্রথমবার বিদেশে প্রদর্শনী করতে চলেছে। তবে তার সে প্যারিস বেড়াতে যাবে।

এত ছোট বয়সে সেলিব্রিটি হওয়ার চাপ কম নয়। বাবা-মা’র চাপ দেওয়ার আশংকাও করেছেন অনেকে। মিকালির বাবা-মা অবশ্য চাপের কথা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, যে মুহুর্তে মনে হবে মিকালির চাপ হয়ে যাচ্ছে, সে ছবির বিষয়টা আর উপভোগ করতে পারছে না, সেই মুহুর্ত থেকেই বন্ধ করে দেবেন তাঁরা। মিকালির শৈশব বিঘ্নিত হয় েমন কিছুই করবেন না বলে জানিয়েছেন তাঁরা।    

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...