মাড়ির ভেতর ৫২৬টি দাঁত!

 

যত দিন যাচ্ছে, ততই যেন নতুন নতুন রোগের শিকার হচ্ছি আমরা। তার মধ্যে শুধু বয়স্করাই নয়, শিশুরাও বিরলতম রোগের শিকার হচ্ছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন ডাক্তারেরাও বিভিন্ন রকমভাবে যাতে রোগ নিরাময় করে রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায়। তেমনই এক চিকিৎসার নজির গড়ল চেন্নাইয়ের সবিতা ডেন্টাল কলেজ হাসপাতাল

          রবীন্দ্রন- মাত্র সাত বছর বয়স। হেসে খেলে ঘুরে বেড়ানোর বয়স এটা। কিন্তু দাঁতের অসহ্য ব্যাথা তাকে সারাক্ষণ বিমর্ষ করে রাখত। শুরুটা হয়েছিল একেবারে শিশু থাকাকালীন। তিন বছর বয়স থেকে ছেলেটির ডানদিকের মাড়ি ফুলে থাকত এবং ব্যাথাও হত। স্থানীয় সরকারি হাসপাতালে দেখানো সত্ত্বেও সেখানে তেমন কোনো অস্বাভাবিকতা বুঝতে পারেননি ডাক্তারেরা। তাই রবীন্দ্রনের মা-বাবাও আর তেমন দুশ্চিন্তা করেননি। ভেবেছিলেন হয়ত ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যত দিন এগিয়েছে, ছোট্ট ছেলে যন্ত্রনায় ছটফট করেছে এবং তার সংগে স্বাভাবিক দাঁতের উদ্ভাবনও হচ্ছিল না ওই দিকে। কিছুদিন দেখার পর রবীন্দ্রনের অভিভাবক চেন্নাইয়ের সবিতা ডেন্টাল হাসপাতালে ডাক্তার দেখান। সেখানে ধরা পড়ে রবীন্দ্রনের 'কম্পাউন্ড কম্পোজিট ওন্ডোনটোম'-এর সমস্যা রয়েছে|

       হাসপাতালের ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক পি. সেন্থিলনাথান জানান, প্রথমে শিশুটির ডান চোয়ালের এক্স-রে করা হয়। এরপর করা হয় সিটি স্ক্যান। সেখানেই ধরা পড়ে ভেতরে বেশ কয়েকটা দাঁত রয়েছে। তবে ঠিক কতগুলো দাঁত তা স্পষ্টভাবে ধরা পড়েনি ওই পরীক্ষাগুলোতে। তখনই ডাক্তারেরা সিদ্ধান্ত নেন ছেলেটির অপারেশন করা হবে। অ্যানাসথেশিয়ার পর যখন ছেলেটির ডানদিকের মাড়ি কাটা হয়, সেখানে প্রায় ২০০ গ্রামের (৪X৩ সেমি) একটি টিউমার পাওয়া যায়। ডাক্তারেরা খুব সাবধানে সেটি বাইরে বের করেন। এবং সকলকে অবাক করে সেখান থেকে ৫২৬টি দাঁত বেরোয়। আকারে মুক্তোর ছোট্ট দানার মত হলেও প্রত্যেকটি কিন্তু পুরোদস্তুর দাঁত-ই। গোটা অপারেশনটি হতে সময় লেগেছিল প্রায় পাঁচ ঘন্টা।

          উক্ত হাসপাতালের ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল প্যাথলজির হেড প্রতিভা রামানি জানান, শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। অপারেশনের পর তাকে তিন দিন অবসার্ভেশনে রাখা হয়েছিল। এর আগে ২০১৪ সালে মুম্বাই-এর সরকারি হাসপাতালে একজন ১৭ বছর বয়স্ক কিশোরের ওপরের মাড়ি থেকে ২৩২টি দাঁত বেরিয়েছিল। এছাড়া এইটুকু শিশুর মাড়ি থেকে এতগুলো দাঁত বেরোনোর ঘটনা বিশ্বে প্রথম বলেও জানান তিনি। 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...