বাঙালির এক সময়ের সাধের ট্রেন, শখের ট্রেন, স্টেটাস মেইনটেইন করবার ট্রেন, আবেগের ট্রেন, কৌতুহলের ট্রেন, বিস্ময়ের ট্রেন পূর্ণ করল ৫০টি বছর| কত স্মৃতিই না রয়েছে এই ট্রেনকে ঘিরে| স্টিম ইঞ্জিনের যুগ সবে শেষ হয়েছে(যদিও কিছু জায়গায় তখনও স্টিম ইঞ্জিনের রেল চলত)সেই ঢিমে চালে চলতে শুরু করা রেলপথে এই ট্রেন এনেছিল দুরন্ত ঝড়ের গতি|তাই একে পক্ষীরাজ এক্সপ্রেসও বলা হত|সকলের দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল এই রাজধানী এক্সপ্রেস|
১৯৬৯ সালে ৩মার্চ প্রথম রাজধানী এক্সপ্রেস যাত্রা শুরু করেছিল হাওড়া থেকে দিল্লীর দিকে| ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিবেগ ছিল প্রথম চালু হওয়া রাজধানী এক্সপ্রেসের| যাঁরা একটু আয়েশ করে যাতায়াত করতে ভালবাসতেন কিন্তু কাজের তাগিদে বা প্রয়োজনে তাড়াতাড়ি যাত্রা করার দরকার হত, তাঁদের কাছে রাজধানী ছিল একেবারে প্রথম পছন্দ|
রাজধানী এক্সপ্রেস রবিবার ৫০ বছর পূর্ণ হল| হাওড়া স্টেশনে কেক কেটে পালন করা হল রাজধানীর জন্মদিন| রেলের ৩ জন কর্মী পতাকা দেখিয়ে এই যাত্রার শুভ সূচনা করেছেন| তাঁরা হলেন প্রাক্তন ট্রেন সুপারিনটেনডেন্ট সুবোধ চন্দ্র ঘোষ, প্রাক্তন গার্ড শংকরদাস চট্টোপাধ্যায় ও প্রাক্তন ট্রেন সুপারিনটেনডেন্ট গনেন্দ্র চন্দ্র তালুকদার| তাঁদের কর্মজীবন থেকেই তাঁরা রাজধানীর সঙ্গে জড়িত| এছাড়া উপস্হিত ছিলেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার হরিন্দ্ররাও, পূর্বরেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জয় সিং, গাহেলট ও হাওড়ার ডিভিশনাল রেল্ওয়ে ম্যানেজার ইশক খান প্রমুখ|
রবিবার ফুলদিয়ে ট্রেনটিকে সাজানো হয়েছিল| লাল গোলাপ দিয়ে আগত যাত্রীদের স্বাগত জানানো হয়েছে|এদিন রেলের পক্ষ থেকে যাত্রীদের মোবাইল ফোনে পাঠানো হল শুভেচ্ছাবার্তা| পূর্ব রেল এদিন হাওড়া স্টেশনে এক জমজমাট অনুষ্ঠানের আয়োজন করে| রবিবার বেলা দেড়টা থেকে এই অনুষ্ঠান পর্ব শুরু হয়ে যায়| ট্রেনের প্রতিটি কামরায় ছিল ৫০ বছরের যাত্রার বিভিন্ন ছবি| আগামী দিনে এই ট্রেনকে অভিজাত ট্রেনের মর্যাদা দেওয়া হবে বলে আশাবাদী পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজের হরিন্দ্ররাও| দিনে দিনে এই ট্রেনে যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে| ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী রেলকর্তৃপক্ষ।