রহস্যে মোড়া একটি দেশ হলো মিশর। সেই দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে নানা ভাস্কর্য। মিশরের মাটিতে পা দিলেই যেন চোখের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায় সেই সময়ের হারিয়ে যাওয়া ইতিহাসের পাতা। আবার কখনো গোটা ইতিহাসটাই চলে আসে চোখের সামনে। হঠাৎ করে জেগে ওঠা কোনো এক স্মৃতি যেন নাড়িয়ে দেয় ভূবিজ্ঞানী থেকে শুরু করে প্রত্নতত্ত্ববিদদের। যেরকমটি ঘটেছে সম্প্রতি। তিন হাজার বছর আগেকার একটি স্ফিংস মূর্তি হঠাৎ জেগে উঠেছে মিশরের বুকে। মিশরীয়দের মতে, স্ফিংস তাদের দেবতা। এই দেবতার মুখমন্ডল ভেড়ার মতন।
সুইডেনের লান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা দল এবং মিশরীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের যৌথ উদ্যোগে মিশরের বুকে এই খননকার্যটি করা হয়। এই খননকার্যের ফলে হাইরোগ্লিফিক অক্ষরে লিখিত একটি লিপিও পাওয়া গেছে। জানা গেছে, এই লিপিটির বয়সও সাড়ে তিন হাজার বছরেরও বেশি। এরই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে একটি বাজপাখির মূর্তিও। এছাড়া খননকার্যের ফলে পাওয়া গেছে ডানাযুক্ত সূর্যদেবের একটি মূর্তি। এই মূর্তিটি প্রাচীন মিশরে অমরত্ব ও বীরত্বের প্রতীক হিসেবে দেখা হতো।
খননকার্যের ফলে একটি ছোট স্ফিংস মূর্তিও পাওয়া গেছে। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে, এই মূর্তিটি আসলে বড় মূর্তিটির প্রতীক মাত্র যা ডেমো হিসেবে বড় মূর্তিটির আগে বানানো হয়েছিল। স্ফিংস দেবতার উল্লেখ আমরা যথাক্রমে গ্রিক ও মিশরীয় সভ্যতায় পেয়ে থাকি। গ্রিক সভ্যতায় স্ফিংসকে নরকের রক্ষাকর্তা হিসেবে দেখানো হলেও মিশরীয় সভ্যতায় এই দেবতাকে উপকারী দেবতা হিসেবেই দেখানো হয়েছে। স্ফিংসের ছবি আমরা ইতিহাস বইতে সকলেই দেখেছি। সিংহের মতো দেহ এবং মানুষের মতো মুখ। এরই সাথে আবার পাখির মতো ডানা। এই তিনের সংমিশ্রনে তৈরী দেবতা স্ফিংস। খননকার্যের ফলে দেখা গেছে, বেশ কিছু মূর্তি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। জানা যায়, রোমানদের আক্রমণের সময় কিছু স্ফিংস মূর্তি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। প্রত্নতত্ত্ববিদদের বক্তব্য, খননের ফলে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী সমস্ত তুতেনখামেনের পিতামহ আমেনহোতেপ তৃতীয়-এর আমলের।