শীত মানেই নলেন গুড়। স্বাদে গন্ধে বদলে দেয় হেঁশেল। পিঠে পায়েস, রসগোল্লা, সন্দেশ-সবেতেই চাই নলেন গুড়। লুচি পরোটার সঙ্গেও চাই গুড়, সব কিছু মিলিয়েই জমজমাট হয়ে ওঠে শীত। নলেন গুড় আসলে খেজুর গুড়। যা খেজুরের রস থেকে তৈরি করা হয়। শীতের মাঝ থেকে এই গুড় পাওয়া যায় বলে একে অনেকে এই গুড়কে নতুন গুড়ও বলে। পিঠেপুলি, মিষ্টি বাদ ছাড়াও গুড়ের খাবারের তালিকায় নতুন সংযোজন নলেন গুড়ের আইসক্রিম। গুড়ের মিঠে পদের কয়ে কটি রেসিপি রইল এই নিবন্ধে
নলেন গুড়ের আইসক্রিম
কী কী লাগবে
দুধ- হাফ লিটার
নলেন পাটালি- ২৫০ গ্রাম
তরল নলেন গুড়- ১ কাপ
ফ্রেশ ক্রিম- ২৫০ গ্রাম
কাজু ও আমন্ড বাদাম- ৫০ গ্রাম
কীভাবে করবেন
দুধ খুব ভালো করে জাল দিয়ে অর্ধেক করে ঘন নিতে হবে। এবার এর মধ্যে অল্প অল্প করে নলেন গুড় মিশিয়ে নিন। আর ক্রমাগত নাড়াচাড়া করুন। পুরো গুড় মেশানো হয়ে গেলে ভাল করে ফুটে ওঠা অবধি অপেক্ষা করতে হবে। এবার গ্যাস বন্ধ করে, নলেন গুড় মেশানো দুধ ঠাণ্ডা করে নিতে হবে।
একটি বাটিতে হুইপ ক্রিম নিয়ে খুব ভাল করে ফেটিয়ে বা ব্লেণ্ড করে আইসক্রিমের বেস বানিয়ে নিন। এবার এর মধ্যে ঠাণ্ডা করা নলেন গুড় মেশানো দুধ দিয়ে আবার খুব ভাল করে ব্লেণ্ড করে নিন। হুইপ ক্রিমের মধ্যে নলেন গুড় পুরোপুরি ভাবে মেশানো হয়ে গেলে এটি খুব সুন্দরভাবে ঘন হয়ে যাবে।
বাদাম ছোট ছোট টুকরো করে বা ক্রাস করে রাখুন। এবার যে পাত্রে আইসক্রিম বানাবেন তার মধ্যে এই মিশ্রণ ঢেলে,২ বার টেপ করে এয়ার ফ্রি করে উপর থেকে ক্রাস করা বাদাম সব দিকে সুন্দর করে ছড়িয়ে দিন। এবার ঢাকা বন্ধ করে ৮ থেকে ৯ ঘন্টার জন্য ডিপ ফ্রিজে সেট হবার জন্য রেখে দিন। সারারাত ধরে রাখলে আইসক্রিম জমে যাবে। পরিবেশনের সময় আইসক্রিমের উপর নলেন গুড় ছড়িয়ে দিলে স্বাদ আর গন্ধে লোভনীয় হয়ে যাবে।
গাজরের ক্ষীর
কী কী লাগবে
গাজর- ৫০০ গ্রাম
দুধ- ১ কেজি
খোয়া ক্ষীর- ৫০ গ্রাম
ছোট এলাচ গুঁড়ো- ১ চা চামচ
ঘি- ৪ টেবিল চামচ
কাজু বাদাম- প্রয়োজন মতো
কিশমিশ- প্রয়োজন মতো
নলেন গুড়- ২ চা চামচ
কীভাবে করবেন
প্রথমে গাজর ধুয়ে খুব ভালো করে গ্রেট করে নিতে হবে। দুধ ফুটিয়ে নিতে হবে। একটি প্রেসার কুকারে ঘি গরম করে ছোৎ এলাচ দিতে হবে। সুগন্ধ বেরলে গাজর সামান্য নুন দিয়ে হালকা নেড়ে তার গরম কর রাখা দুধ ঢেলে দিতে হবে। অর্ধেক খোয়া ক্ষীর মিশিয়ে প্রেসার কুকারের ঢাকনা বন্ধ করে একটা হুইসেল দিতে হবে। এবার কুকারের ঢাকনা খুলে কম আঁচে অনবরত নাড়াতে হবে। যারা মিষ্টি বেশী খান চিনি মেশাতে পারেন। তবে চিনির মাত্রা একটু কম রাখতে হবে। এবার এক চামচ ঘি দিয়ে নাড়িয়ে গাজর ও দুধের মিশ্রণ ক্ষীরের মতো হলে নামিয়ে কাজু কিসমিস আর গুড় দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
ক্ষীর কমলা
কী কী লাগবে
কমলা লেবু- ৪টি
দুধ- ২ লিটার
চিনি- ২০০ গ্রাম
খোয়া ক্ষীর- ১৫০ গ্রাম
কাজু বাদাম- ৫০ গ্রাম
নলেন গুড়- ২ চা চামচ
কীভাবে করবেন
দুধের মধ্যে চিনি ও খোয়া ক্ষীর দিয়ে অল্প আঁচে ফোটাতে থাকুন। ক্রমাগত নাড়তে হবে। না হলে পাত্রের নীচে লেগে যেতে পারে। যখন মিশ্রণটি একটু গাঢ় হয়ে আসবে তখন আঁচ থেকে পাত্রটি নামিয়ে ঠান্ডা হতে দিন। এ বার একটি কমলা লেবুর রস তৈরি করে রাখুন। অন্য চারটি কমলা লেবু ছাড়িয়ে বীজ বার করে ভেতরের একদম ছোট ছোট দানা বার করে নিন। ক্ষীর ঠান্ডা হলে তাতে কমলা লেবুর রস মেশান এবং কমলার ছোট থোট দানাগুলিও মিশিয়ে দিন। ফ্রিজে ঘণ্টা খানেক ঠান্ডা হতে দিন। কাজু বাদামগুলি মিক্সিতে ক্রাশ করে নিন। চেরিগুলোকে মাঝ খান বরাবর কেটে ভেতর থেকে বীজ বার করুন। পরিবেশনের সময় উপর থেকে টুকরো করে গুড় ও কাজুবাদাম ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।