বন্ধুদের সঙ্গে উইকএন্ডে ঘুরতে গিয়েই বাইকের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন ঐশ্বর্য পিসায়। ২০১৫ সালে মনস্থ করেন, সঠিক ট্রেনিং নিয়ে বাইক চালানো শিখবেন। যেমন ভাবা, তেমনি কাজ। কোয়েম্বাটোরের 'অপেক্স রেসিং একাডেমি'-তে ভর্তি হলেন। তিনি আরো সিদ্ধান্ত নিলেন, প্রফেশনালি এই বাইক-ই হবে তাঁর একমাত্র সঙ্গী। যদিও বেশ কয়েকজন মহিলা বাইকারের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়, যাঁরা শৌখিন বাইকার হিসেবেই নিজেদের পরিচিতি নিয়ে খুশি ছিলেন। কিন্তু ঐশ্বর্য ছিলেন ভিন্ন ভাবধারার, তিনি একেবারে পেশা হিসেবেই বেছে নিলেন বাইক রাইড কে।
এই স্রোতের বিমুখে চলার ফল তাই পেলেন তিনি হাতেনাতে। ১২ আগস্ট সোমবার হাঙ্গেরির ভারপালোতায় আয়োজিত এফআইএম বিশ্বকাপের মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হলেন তিনি। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে এই ক্যাটেগরিতে এটাই প্রথম পদক যা বিশ্বের দরবারে ঐশ্বর্যকে পরিচিতি ঘটাল এবং পাশাপাশি ভারতকেও বিশ্বের দরবারে মোটর সাইকেল রেসে নথিভুক্ত করাল।
বিশ্বের মোটর সাইকেল রেসিং-এর গভর্নিং বডি হিসেবে 'ইন্টারন্যাশনাল মোটরসাইক্লিং ফেডারেশন' উক্ত খেলাটির আয়োজন করে। দুবাইয়ে প্রথম রাউন্ড জেতেন তিনি। পর্তুগালে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন, স্পেনে পঞ্চম, হাঙ্গেরিতে চতুর্থ এবং সর্বশেষ রাউন্ডে মোট ৬৫ পয়েন্ট পেয়ে পর্তুগালের রিতা ভিয়েরার সঙ্গে লড়ে শেষ বাজি জিতে নেন। ভারতের মোটর সাইকেল স্পোর্টস-এর গভর্নিং বডি 'ফেডারেশন অফ মোটর স্পোর্টর্স ক্লাব অফ ইন্ডিয়া' ঐশ্বর্যর এই সাফল্যে তাঁকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এর আগে ভারতের পাঁচটি জাতীয় ইভেন্টেও চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঐশ্বর্য নিজের প্রতিভার সাক্ষর রেখেছিলেন।
Newsflash: Aishwarya Pissay of TVS clinches the Fim Baja World Cup 2019 Women's Category. She finished 4th in the Hungary Round which concluded today. #Fmsci congratulates India's first #FIM World Cup champion. pic.twitter.com/AefIpGM57D
— FMSCI (@fmsci) August 12, 2019
তবে কিছুদিন আগেই দু-দুটি দুর্ঘটনা ঐশ্বর্যের লক্ষ্য পূরণের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ২০১৭ সালে কলারবোনে গুরুতর চোট পেয়েছিলেন তিনি এবং ২০১৮ সালে পড়ে গিয়ে প্যাংক্রিয়াসে এমন আঘাত লেগেছিল, যার ফলে তা ফেটে গিয়েছিল। এই দুটি দুর্ঘটনা তাঁকে আরো এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে অনড় করে তুলেছিল। দু মাস হাসপাতালে থাকাকালীন প্রতি মুহূর্তে তাঁর মনে হত, আর বুঝি পারা যাবেনা। কিন্তু হার মানতে শেখেননি ২৩ বছরের ঐশ্বর্য। সাতটি স্ক্রু এবং একটি স্টিলের পাত কলারবোনে লাগিয়ে তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়ে বাইক নিয়ে ছুটেছিলেন নিজের লক্ষ্যের দিকে।