সাইবেরিয়ান পার্মাফ্রস্ট-এর কাহিনী সকলেরই জানা| পের্মাফ্রস্ট হলো এমন একটি জায়গা যেখানকার তাপমাত্রা থাকে জলের হিমাঙ্কের সমতায় কিংবা তার নিচে| পাথর ও মাটি মিশ্রিত এই জমির খোঁজ মেলে মূলত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেকটা উঁচুতে| তাছাড়া মাঝেমাধ্যেই নানা কারণে সংবাদের শিরোনামে থাকে এই পার্মাফ্রস্ট অঞ্চলগুলি| তার মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো সাইবেরিয়ান পার্মাফ্রস্ট, কারণ এইস্থানে মাঝেমাঝেই খুঁজে পাওয়া যায় নানা হিমায়িত সম্পদ|
এর আগে, সাইবেরিয়ান পার্মাফ্রস্ট থেকে খুঁজে পাওয়া গেছিল ৪২,০০০ বছর আগের এক অশ্বশাবককে| এমনকি সেখান থেকে আবিস্কৃত হয়েছিল এক প্রাচীন নেকড়ের মাথাও| তারপর থেকেই ধরে নেওয়া হয় এইস্থান থেকে বহু পুরাতাত্ত্বিক প্রাণীর খোঁজ মেলা সম্ভব যা বর্তমান যুগে লুপ্ত হয়ে গেছে| সম্প্রতি এই এলাকাটি থেকে খোঁজ মিলেছে ১৮,০০০ বছর আগের একটি সারমেয় শাবকের দেহ, তাও সম্পূর্ণ অবিকৃত অবস্থায়| জানা গেছে, সারমেয় শাবকটির বয়স মাত্র দুইমাস| শাবকটির গোঁফ, চোখের পাতা, এমনকি দুধের দাঁত পর্যন্ত অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে| বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই শাবকটি তুষার যুগের নেকড়ে শাবকও হতে পারে| কিন্তু নেকড়ে বা কুকুরের মধ্যে তফাত করা যাচ্ছেনা বলে তারা ধরে নিয়েছেন, এটি কোনো নেকড়ে ও কুকুরের মধ্যবর্তী প্রজাতির কোনো জীবও হতে পারে| জানা গেছে, এই শাবকটি গ্রীষ্মকালে প্রথম আবিস্কৃত হয়| ইন্ডিগির্কা নদীর তটে জমাট বাঁধা অবস্থায় খোঁজ মেলে তার|
এই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শাবকটি কেন মারা গেছিল তার প্রকৃত কারণ আজও জানা যায়নি| তবে শাবকটি যে কোনো যন্ত্রণার মধ্যে ছিল না তা নিয়ে নিশ্চিত তাঁরা| প্রাণীটির শরীর থেকে নমুনা নিয়ে পাঠানো হয়েছে সুইডিশ সেন্টার ফর প্যালিওজেনেটিক্স-এ| সেখানে পরীক্ষানিরীক্ষার পর জানা যাবে প্রাণীটি আসলে নেকড়ে শাবক নাকি সারমেয় শাবক| বিজ্ঞানীরা শাবকটির নামকরণ করেছেন ডগর, স্থানীয় ভাষায় যার অর্থ ‘বন্ধু’|