রাজ্যের উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর উন্নয়ন ঘটানো খুব জরুরি- একথা মুখ্যমন্ত্রী খুব ভালোভাবেই জানেন। তাই বারে বারেই নজর দিয়েছেন তাদের প্রতি। শবর, বিরহর, টোটো প্রভৃতি আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রকৃত অবস্থা জানতে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। আদিবাসী কল্যাণ দফতর আয়োজিত গত ২১ ও ২২ নভেম্বর ওই সমীক্ষায় তাদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে রাজ্যে মোট ৪০ হাজার আদিবাসী বাস করেন। এর মধ্যে ১৮হাজার শবর, ৩৬৫ জন বিরহর এবং ১৫০০ টোটো উপজাতি রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই সম্প্রদায়ের জন্য আট দফা উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে নবান্ন। ২০১৮-১৯ আর্থিক বর্ষে বিশেষ প্যাকেজ হিসেবে ১২.৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হল ওই প্রকল্পে।
ওই সম্প্রদায়ের মানুষেরা নিজেদের মত চলতে পছন্দ করেন, তাই এদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর নির্ভর করে আদিবাসী বসতি এলাকায় উন্নয়নের কাজে হাত দেবে সরকার। সেই টাকায় বাংলা আবাস যোজনায় আদিবাসীদের বাড়ি তৈরী করে দেওয়া হবে। যাঁদের বাড়ি খারাপ অবস্থায় রয়েছে, তাদের বাড়ি সারিয়েও দেওয়া হবে। পানীয় জলের সুব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। আদিবাসী পরিবারগুলি যাতে জীবন যাপনের জন্য নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে, তার জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত করে আয়ের ব্যবস্থা করা হবে। তাদের গরু, ছাগল, মুরগির ছানা বিতরণ করা হবে। হর্টিকালচার, ফ্লোরিকালচার, মুরগির খামার তৈরী করে দেবে সরকার। আদিবাসী এলাকায় চাষযোগ্য জমির উন্নতি করা হবে। একই সঙ্গে সেচের ব্যবস্থা করবে সরকার। হস্তশিল্পে তাদের প্রশিক্ষণ দেবে সরকার। তাদের হাতে তৈরী শিল্প যাতে বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা করা যায়, তার জন্য সরকার উদ্যোগী হবে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে উৎসাহ দিতে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া কৃষির উন্নতিতে সেচের ব্যবস্থা করা হবে। ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য ক্লাস্টার তৈরী করা হবে। মূলত আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনের মানোন্নয়ন ও সামাজিক উন্নয়নের ওপরেই জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। এভাবেই আদিবাসী অধ্যুষিত জায়গার উন্নতিকল্পে বিভিন্ন রকম প্রকল্প গঠন করা হয়েছে।