রাজ্যের উন্নতি তখনই সম্ভব, যখন রাজ্যের মানুষ সঠিক শিক্ষা পাবেন, সঠিক চিকিৎসা পাবেন, সঠিক খাদ্যের সংস্থান হবে এবং থাকার উপযুক্ত বাসস্থান থাকবে। এই লক্ষ্যে একটু একটু করে এগোচ্ছে রাজ্য। পরিসংখ্যান বলছে, মুখ্যমন্ত্রী যে সকলের জন্য চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা অনেকাংশেই সফল হয়েছে। শেষ আর্থিক বছরে মমতা সরকার গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শুরু করে শহরের বড় বড় মেডিক্যাল কলেজেও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে রোগীদের জন্য প্রায় ১২০০ কোটি টাকার ওষুধ ও যন্ত্রপাতি দিয়েছে। যা রাজ্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ইতিহাসে সর্বকালীন রেকর্ড। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সরকার এক বছরে ফ্রি মেডিসিন বাবদ খরচ করেছে ৬৫০ কোটি টাকা। যন্ত্রপাতি বাবদ খরচ করা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। অর্থাৎ শুধু ওষুধ ও যন্ত্রপাতি মিলিয়েই খরচ হয়েছে ১১৫০ কোটি টাকা।
যত দিন এগিয়েছে, ততই বিনামূল্যে ওষুধ ও যন্ত্রপাতির খাতে খরচ বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিনামূল্যে চিকিৎসা শুরু হয়েছিল যে বছরে, অর্থাৎ ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে, রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরণের ওষুধ দিতে রাজ্য খরচ করেছিল ৩৫০ কোটি টাকা। বিনামূল্যের যন্ত্রপাতির খরচ আরো খরচ হয় আরও ৩০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে ওষুধ ও যন্ত্রপাতি বাবদ খরচ করা হয় ৬৫০ কোটি টাকা। পরের আর্থিক বছরেই ওষুধের খাতে খরচ করা হয় ৪৯০ কোটি টাকা এবং ৬৮০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে যন্ত্রপাতির জন্য। সেটাই আগের দু-বছরের সমস্ত হিসেবে নিকেশ ছাড়িয়ে দেড় গুণের বেশি খরচ বাড়ানো হয় ওষুধ ও যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে। বিভিন্ন রোগের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণের সঙ্গে সঙ্গে দামি অর্থোপেডিক ইমপ্লান্ট, হার্টের রোগীদের জন্য ক্যাথিটার, বেলুন, স্টেন্ট, পেসমেকার সহ অজস্র ধরণের যন্ত্রপাতি প্রভৃতি ছাড়াও ক্যান্সার, হেমাটোলজি প্রতিস্থাপন সহ সব ধরণের চিকিৎসাতেও বিনামূল্যে পরিষেবা দিয়েছে রাজ্য। যত দিন যাচ্ছে, সরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিনামূল্যে ওষুধ ও যন্ত্রপাতির চাহিদাও বেড়ে চলেছে। তাই রাজ্য সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষ এখন থেকে ভরসা করতে শুরু করেছেন এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্য যথার্থই রূপ পাচ্ছে।