জাতীয় স্তরে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে সারা দেশে ১ কোটি এলইডি স্ট্রিট লাইট ব্যবহার করা হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি এতে বিদ্যুতের সাশ্রয়ও হচ্ছে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সমগ্র বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎসাশ্রয়ী কর্মসূচি রূপায়ন করছে ভারত। ভারত-প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত রূপায়ন করা হচ্ছে বলেই জানানো হয়েছে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে।
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে যে জাতীয় মিশন গ্রহণ করা হয়েছে, তার উদ্দেশ্য হল, ১৯,৫৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ব্যবহার কমানো। এর সঙ্গে বার্ষিক ২ কোটি ৩০ লক্ষ টন জ্বালানি সাশ্রয় এবং প্রতি বছর ৯ কোটি ৮৫ লক্ষ ৫০ হাজার টন গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রেও বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি হল স্ট্রিট লাইটিং বা রাস্তা আলোকিতকরণ সংক্রান্ত জাতীয় কর্মসূচি। এই কর্মসূচির মাধ্যমে এক নজিরবিহীন মাইলফলক অর্জিত হয়েছে। এর ফলে বার্ষিক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৬.৭১ বিলিয়ন কিলোওয়াট।
এমনকি, কার্বন নিঃসরণের পরিমান কমেছে ৪৬ লক্ষ ৩০ হাজার টন। বিদ্যুৎসাশ্রয়ী এই উদ্যোগের ফলে ব্যাপক বিদ্যুতের চাহিদার সময় ১,১১৯.৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চয় করা সম্ভব হয়েছে। এমনকি, ২ লক্ষ ৭০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের আলোকিতকরণ সম্ভব হয়েছে। সমগ্র এই কর্মযজ্ঞে ১৩ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষই এলইডি আলো রাস্তায় লাগানোর ফলে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন। সমীক্ষায় আরও জানা গেছে, এই ধরনের আলো ব্যবহারের ফলে সড়ক নিরাপত্তার পাশাপাশি ব্যবসায়িক কাজকর্মও বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাস্তায় এত বৃহৎ পরিসরে এলইডি আলো লাগানোর কর্মসূচি বিশ্বে এই ধরনের সর্ববৃহৎ উদ্যোগ। এই কর্মসূচির সাফল্যের পেছনে রয়েছে 'পে-অ্যাজ-ইউ-সেভ' মডেল। এর ফলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে খরচ যেমন কমবে, তেমনই অতিরিক্ত রাজস্ব বাজেট তৈরী করার প্রয়োজন পড়বেনা। এই আলো ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে যে মাইলফলক অর্জিত হয়েছে, তা কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে জাতীয় উদ্দেশ্যগুলি পূরণে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।