অনিন্দিতা সান্যাল, কলকাতা
আমি প্রকৃতি, প্রকৃতির কোলেই জন্ম লাভ আমার। কোন ভোরে পিতৃদেব মাটি সেঁচে আমাকে নিয়ে এলেন নিজগৃহে,শাঁখ বেজেছিল কিনা মনে নেই আর| সেই থেকে মহাকাব্যের কেন্দ্র আমি। সহনশীলতা এবং গ্রহণশীলতার ভারসাম্যবিন্দু আমি| সেই জন্মলগ্ন থেকে হেঁটে চলেছি| ফুলের পথ, কাঁটার পথ, নুড়ি পাথর বালির পথ....সবই বিছানো আছে আমার জন্য।
বাবা, ভাই,বন্ধু, স্বামী, সন্তান নির্মিত চক্রবূহ্যে প্রবেশ করেছি প্রস্থানের পথটুকু জেনেই বদলে নিয়েছি নিজেকে ঋতুপরিবর্তনের ছন্দে, তাই ত্বকের পেলবতা কমেছে রুক্ষতা বেড়েছে। হিংস্রতাকে বেছে নিয়ে যে পুরুষ বদলে দিয়েছে দেশ- কালের নকশা তার পশ্চাতে থেকে ব্যবহার করেছি নিজের বুদ্ধিমত্তা| একরাশ দগদগে ক্ষতে ভরে গেছে স্বত্ত্বা, তবু সিংহদুয়ারের লক্ষণরেখা পেরিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছি সমৃদ্ধির বীজ।
আমারই গর্ভে লালিত হয়েছে হাজার হাজার কুসন্তান, হেরে গিয়েছি নিজের অপত্য স্নেহের কাছে। মনে রেখেছি কবির কল্পনা আমি, প্রেমিকের যন্ত্রনা আমি, পিতার সান্ত্বনা আমি| আমার স্বত্ত্বার পরিপূরক যে পুরুষ আমার সন্তানের পিতা এবং আমার উত্তরপুরুষ কালচক্রের শেকলে বাঁধা না পড়ে তার চাবিকাঠি গুছিয়ে রেখেছি নিজের আঁচলে.....বয়ে নিয়ে চলেছি মুক্তিহীন, ক্লান্তিহীন, অবসরহীন আমার এ শরীরে!!!