হিন্দুদের মতে, মোক্ষ লাভের সবচেয়ে সহজ উপায় হল চারধাম যাত্রা। আর চার ধামের কথা কথা উঠলে আমরা বুঝি বদ্রীনাথ, দ্বারকা, পুরী এবং রামেশ্বরম মন্দিরের নাম। আদি শঙ্করাচার্য ভারতের চারদিকে চার মঠ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই পবিত্র চারধাম ধর্মীয় এবং আধ্যাত্মিক স্থান হওয়ার পাশাপাশি আকষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেও জনপ্রিয়। উদাহরণস্বরূপ, পুরী হল ওড়িশার একটি সমুদ্র সৈকত, অন্যদিকে বদ্রীনাথ হল উত্তরাখণ্ডের একটি সুন্দর পাহাড়ি শহর। এই নিবন্ধে দেশের চারধাম সম্পর্কে কিছু তথ্য দেওয়া হল।
বদ্রীনাথ মন্দির: বদ্রীনাথ মন্দির অবস্থিত বদ্রীনাথ শহরে। ভক্তদের বিশ্বাস বদ্রীনাথ শহরেই ভগবান বিষ্ণুর থাকেন। এই মন্দির এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি বছর ছয় মাসের জন্য খোলা থাকে। প্রাচীন মন্দিরটি বিষ্ণু পুরাণের মতো প্রাচীন গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায় এবং এটি উত্তরাখণ্ডের গাড়ওয়াল পাহাড়ে অবস্থিত। এখানে মূল মন্দিরে, আপনি ভগবান বদ্রীনারায়ণের একটি মূর্তি দেবতা দেখতে পাওয়া যায়। ট্রেনে দেরাদুন আসলে সেখান থেকে বাস ও গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে এখানে আসার জন্য।
পুরী জগন্নাথ মন্দির: এই ভগবান জগন্নাথকে উৎসর্গ করা হয়েছে। যিনি ভগবান কৃষ্ণের রূপ হিসাবে পূজিত হন। এটি যাত্রায় তৃতীয় ধাম। মন্দিরটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু মন্দির। যেখানে ভগবান জগন্নাথ তার ভাই বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার মূর্তি রয়েছে। প্রতি বছর রথযাত্রার সময় বহু মানুষের ভিড় দেখা যায় মন্দির চত্বরে। এই মন্দিরে আসতে ট্রেনে প্রথমে পুরী শহরে আসতে হবে তার সেখান থেকে বাস অথবা ট্যাক্সিতে মন্দিরে আসা যায়।
দ্বারকাধীশ মন্দির: গুজরাটের দ্বারকায় অবস্থিত দ্বিতীয় ধাম, মন্দিরটিকে দ্বারকাধীশ মন্দির বলা হয়। এটি জগৎ মন্দির নামেও পরিচিত, এই মন্দিরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পুজো করা হয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে দ্বারকাধীশ শ্রীকৃষ্ণের দ্বারাই এই মন্দির নির্মিত হয়েছিল, দ্বারকা শহরটি বহু প্রাচীন একটি শহর। এই শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে গোমতী নদী। এই নদীর তীরেই রয়েছে দ্বারকাধীশ মন্দির। গুজরাটের এই মন্দিরে আসার জন্য ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থা রয়েছে।
রামেশ্বরম মন্দির: তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমের রামানাথস্বামী মন্দিরটি ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছে। এটি ১২টি জ্যোর্তিলিঙ্গ মন্দিরের মধ্যে একটি। এছাড়াও চারধাম মন্দিরের মধ্যে অন্যতম। ভক্তদের বিশ্বাস এখানে যে শিব লিঙ্গটি রয়েছে সেটা বালি দিয়ে তৈরি করেছিলেন মা সীতা। আইকনিক মন্দিরটির চারপাশে ৬৪টি পবিত্র জলাশয় রয়েছে এবং এখানে এই পবিত্র জলাশয়ে স্নান করেন তীর্থযাত্রীরা। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরম দ্বীপে অবস্থিত এই মন্দিরে রাজধানী চেন্নাই থেকে রামেশ্বরমের দূরত্ব ৫১৮ কিলোমিটার।
এছাড়াও উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথ মন্দির, যমুনাত্রী মন্দির, গঙ্গোত্রী মন্দির, কেদারনাথ মন্দিরকে ছোটা চারধাম বলা হয়। শীতকালে বন্ধ থাকে এই চারটি মন্দির।