আমি গৌরব রায়। আমার শিল্পী হয়ে ওঠার সলতে পাকানোটা শুরু হয়েছিল আধা গ্রাম-আধা শহরের লৌকিক কাব্যের মধ্যে দিয়েই। আকাশকুসুম কল্পনা আর পাঁচ মেশালি দৃশ্য জোড়া দিয়ে দিয়ে উদাস বাউলের জামার মতো রঙিন স্বপ্ন। সেই স্বপ্নই একসময় একমাত্র ধ্যান হয়ে দাঁড়ালো। আর তা খানিকটা প্রশ্রয় পেল শান্তিনিকেতনের কলাভবনে পড়ার সুযোগ পেয়ে।শিল্পী হওয়ার সেই শিশুসুলভ সাধ কিছুটা পরিপক্ক হয়ে ওঠে সেখানেই।
একদিকে বিপুল ঐতিহ্যের অনুশাসন অন্যদিকে দিগন্ত বিস্তৃত প্রকৃতির নিবিড় আস্কারার লালনে। গুণীজনের সান্নিধ্য এবং ক্রমাগত অভ্যাস আমার দেখার, ভাবার এবং প্রকাশ করার দৃশ্যভাষাকে পরিশীলিত করেছে। এখন করছে। সৌভাগ্যের বিষয় পঠনপাঠন পরবর্তী কালেও প্রকৃতির সান্নিধ্য কখনও আমায় ছাড়তে হয়নি।
আমার ভাবনার আর ছবির রসদ সেই জুগিয়ে চলেছে। পেশাগত কারণে আমায় দেশের নানাপ্রান্তে যেতে হয়েছে। সেখানকার আবহাওয়া, ভূ-প্রকৃতির বিন্যাস আমার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। যেখানে আমি গিয়েছি সেখানকার লোককলা, সঙ্গীত, টেক্সটাইল-এ সমস্ত রসদ সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি।
কলাভবনের শিক্ষা তো বটেই সেখান থেকে আরও যা আমি পেয়েছি তা হল চোখ মেলে দেখার ও জানার দীক্ষা। সেই দেখা আর শেখার প্রতিফলনই আমার চিত্রপটে মূর্ত হয়ে ওঠে। গড়ে তুলি সমান্তরাল এক প্রকৃতি আমার ছবিতে।