বোলপুরের বল্লভপুর গ্রামের মানুষ তিনি। বিশ্বভারতীর ছত্রছায়ায় পড়াশোনা করছেন। প্রাথমিক স্তর থেকে স্নাতকোত্তর পর্ব সেখানেই। এবার বিশ্বভারতী থেকে সরাসরি টোকিওয় অধ্যাপনার ডাক পেলেন বঙ্গ তনয় নবগোপাল রায় ওরফে গোপাল।
অতীতে শিকাগো ও অক্সফোর্ড বিদ্যালয়ে অধ্যাপনার কর্মে নিযুক্ত ছিলেন। বর্তমানে পুরুলিয়ার সিধু কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের অধ্যাপকের পদে নিযুক্ত রয়েছেন। এবার সুদূর টোকিও ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলা পড়ানোর জন্য ডাক পেলেন বাংলার এই তরুণ। ‘টোকিও ইউনিভার্সিটি অফ ফরেন স্টাডিজ’ এ অতিথি অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করতে চলেছেন তিনি।
তবে দিন সাতেক আগে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মেইল এর মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে শুরুতেই তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিতে পারেন নি তিনি। কেন না, বিষয়টি সিধু কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিচারাধীন। তাঁরা অনুমিতে দিলে তবেই মিলবে জাপানে অধ্যাপনার ছাড়পত্র। খুব শীঘ্রই যে ব্যাপারটির মীমাংসা হবে সে বিষয়ে প্রবল আশাবাদী তিনি।
সবকিছু ঠিকিঠাক থাকলে এবছর অক্টোবরেই বাংলা পড়াতে জাপান পাড়ি দেবেন নবগোপাল। টানা দু’বছর সেখানে অধ্যপনার দায়িত্বে থাকবেন তিনি। অতীতেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যপনার দায়িত্ব সামলেছেন বাংলার পবিত্র সরকার এবং শুভ দাশগুপ্ত। তবে এই প্রথম বিশ্বভারতী থেকে সরাসরি অধ্যপনার আমন্ত্রন পেলেন কোনও বাঙালি।
বলাই বাহুল্য এই খবরের সুবাদে, যারপরনাই উচ্ছ্বসিত তাঁর গ্রামবাসী। তাঁদের গ্রামের ছেলে বিদেশে গিয়ে বাংলার সংস্কৃতি-ভাষা কে তুলে ধরুক আন্তর্জাতিক মঞ্চে, এই তাঁদের আকাঙ্ক্ষা।
এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে জাপানের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন গোপাল। কীভাবে জাপানের সংস্কৃতির সাথে বাংলার সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটেছিল, তাঁদের ভাবধারার সঙ্গে আমাদের লোকধারা, এ সম্বন্ধে আলোচনায় মুখর হয়ে ওঠেন তিনি।
অল্পবিস্তর জাপানি ভাষা জানেন গোপাল। বাংলার অধ্যাপক হলেও ভাষার প্রতি প্রেমের সুবাদে এখন জাপানি ভাষা করতলগত করতে ভীষণভাবে উদ্যোগী হয়ে পড়েছেন বোলপুরের এই অধ্যাপক।
ছেলেবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল অধ্যাপক হবেন, স্ব শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের। ভাষার উন্মুক্ত পরিধী বিস্তৃত করবেন তাদের সামনে। পূর্বেই সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছিল। একজন বাঙালী হিসেবে, বাংলার জন্য এখন সেই স্বপ্নকে আন্তর্জাতিক স্তরে ছড়িয়ে দিতে পারার আমন্ত্রণ পেয়ে আপ্লুত ও গর্বিত গোপাল।